শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১২:০৪ অপরাহ্ন

News Headline :
ভারতে চিকিৎসা সেবায় সুযোগ সুবিধা প্রদানে যৌথ সভা  অবৈধভাবে চাল মজুদ রাখার অভিযােগে আবারো মিল মালিককে জরিমানা উন্নত মানের কম্বল পেয়ে খুশি দরিদ্র মানুষেরা এক হাজার দরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র প্রদান করলেন বিজিএমিইএ’র সভাপতি প্রশাসনে বদলীর নির্দেশনায় ঠাকুরগাঁওয়ের চার ওসি, দুই ইউএনও জনপ্রিয় নেতা আলী আসলাম জুয়েলকে নৌকার মাঝি হিসেবে পেতে মড়িয়া ভোটাররা তারেক পাকিস্তান থেকে লোক পাঠিয়ে নৈরাজ্য চালাচ্ছে শান্তি সমাবেশে -যুবলীগ নেতা জুয়েল ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতায় ফ্রি ডেন্টাল ক্যাম্পেইন টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ সাংবাদিক আইনুলের লজ্জা থাকলে আ’লীগে যোগ দিন বিএনপির উদ্দেশ্যে যুবলীগ নেতা-আলী আসলাম জুয়েল

রোহিঙ্গা স্থানান্তর সমর্থন করো, নইলে দেশ ছাড়ো: জাতিসংঘকে বাংলাদেশ

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

সম্প্রতি জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে গত ৪ সেপ্টেম্বর।

জাতিসংঘের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে স্থানান্তরে বাংলাদেশের যে পরিকল্পনা, তাতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সমর্থন দিক, নয়তো তারা দেশ ছেড়ে চলে যাক।

ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক নাওমী কনরাড ও আরাফাতুল ইসলাম ২৬ আগস্ট, ২০১৯ ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন। সময় সংবাদের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিচে তুলে ধরা হলো। 

ডয়চে ভেলে: অধিকাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থীই মিয়ানমারে ফিরতে চায় না। সে কারণেই কি আপনারা তাদের ভাসান চরে সরাতে চাইছেন?

একে আব্দুল মোমেন: আমার মনে হয় রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে পাঠানোর এখনই সময়। তবে ঐ দ্বীপে সব রোহিঙ্গাকে পাঠানো সম্ভব নয়। আমরা মাত্র এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে পাঠাতে পারি।


আমরা তাদের জোর করে পাঠাতে চাই না। আমরা আশা করেছিলাম, তারা স্বেচ্ছায় সেখানে যাবে।

দ্বীপে শরণার্থীরা অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারবে। কিন্তু কক্সবাজারে কাজ করা ত্রাণ সংস্থাগুলো ভাসান চরে যেতে চায় না। কক্সবাজারে তারা পাঁচ তারকা হোটেলে থাকতে পারেন, তাই তারা অন্য জায়গায় যেতে চান না।

আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার মধ্যে যারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে রাজনীতিকরণ করতে চাইছে আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।

ডয়চে ভেলে: তার মানে কি এই যে, জাতিসংঘের সংস্থাগুলো আপনাদের পরিকল্পনা সমর্থন না করলেও আপনারা রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে পাঠাবেন?

একে আব্দুল মোমেন: হ্যাঁ, সম্ভবত। আমরা অনেক লিফলেট, সিডি ও ভিডিও জব্দ করেছি, যেগুলোতে রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট কিছু দাবি না মানলে মিয়ানমারে ফিরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কিছু দাবি মানতে রাজি হয়েছে, যেমন নিরাপত্তা দেয়া ও চলাফেরার অনুমতি। তবে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দেয়া, রোহিঙ্গাদের এথনিক গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং রোহিঙ্গাদের তাদের নিজেদের ঘরবাড়িতে ফেরার অনুমতি দেয়ার মতো দাবি মানা হয়নি।

ডয়চে ভেলে: জাতিসংঘের সমর্থন ছাড়া কি বাংলাদেশ এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসান চরে সরাতে পারবে?

একে আব্দুল মোমেন: আমরা তা করতে পারবো। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করেন রোহিঙ্গারা; এই সংখ্যা কিছু দিনের মধ্যে পৌঁছে যায় সাত লাখে। আর আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

ডয়চে ভেলে: জাতিসংঘ কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

একে আব্দুল মোমেন: জাতিসংঘকে এই পরিকল্পনা মেনে নিতে হবে, নয়তো তারা রোহিঙ্গাদের তাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে। এই মানুষদের অনেকেই ইতিমধ্যে অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েছে।

ঐ এলাকায় রোহিঙ্গাদের সংখ্যা স্থানীয়দের প্রায় দ্বিগুন। স্থানীয়রা নিয়মিত অপরাধমূলক কার্যক্রমের অভিযোগ করছে। আমরা তা হতে দিতে পারি না। সে কারণে আমরা তাদের ভাসান চরে যেতে বাধ্য করতে পারি।

বাংলাদেশ ধনী রাষ্ট্র নয়। আমরা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাষ্ট্র। এরপরও আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক কিছু করেছি। এখন অন্যদের এগিয়ে আসতে হবে কারণ এটা শুধু আমাদের সমস্যা নয়। এটা একটা আন্তর্জাতিক ইস্যু। আমরা যদি তাদের নিরাপত্তা না দিতাম, তাহলে তারা গণহত্যার শিকার হতে পারতো।

ডয়চে ভেলে: এটা হুমকির মতো শোনাচ্ছে। 

একে আব্দুল মোমেন: আমরা তাদের যে কোনো জায়গায় পাঠাতে রাজি, যে কারও কাছে, যারা তাদের নিতে চায়। তাদের অনেক বছর রাখার সামর্থ্য আমাদের নেই।

ডয়চে ভেলে: যদি তা না ঘটে, তাহলে কি রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে যেতে হবে?

একে আব্দুল মোমেন: এটা একটা অস্থায়ী ব্যবস্থা। আমরা তাদের চিরদিন রাখতে পারি না।

ডয়চে ভেলে: জাতিসংঘের বিরোধিতা করার সামর্থ্য কি বাংলাদেশের আছে?

একে আব্দুল মোমেন: জাতিসংঘ আমাদের বেশি সাহায্য করছে না। তারা মিয়ানমারের রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারছে না। জাতিসংঘের এই সংস্থাগুলো কেন মিয়ানমারে কাজ করছে না? তাদের মিয়ানমারে যাওয়া উচিত, বিশেষ করে রাখাইনে। সেখানে এমন পরিবেশ তৈরি করা উচিত, যা রোহিঙ্গাদের ফিরতে সহায়তা করতে পারে। জাতিসংঘের কাছ থেকে আমরা যে কাজ প্রত্যাশা করি, তা জাতিসংঘ করছে না।

ডয়চে ভেলে: জাতিসংঘের সংস্থাগুলো যদি আপনাদের পরিকল্পনা সমর্থন না করে তাহলে কি আপনারা তাদের তাড়িয়ে দেবেন?

একে আব্দুল মোমেন: যদি প্রয়োজন হয়, আমরা তা-ই করবো।

ডয়চে ভেলে: দ্বীপটি ঘূর্ণিঝড়প্রবণ। সেটি কি মানুষের বসবাসের উপযোগী?

একে আব্দুল মোমেন: এটা নিরাপদ। আমরা সেখানে সুন্দর বাড়ি ও বাঁধ নির্মাণ করেছি। আমরা যদি বাংলাদেশিদের সেখানে যেতে বলি তাহলে তারা নিশ্চয় যাবে।

ডয়চে ভেলে: রোহিঙ্গারা যদি ভাসান চরে যায় তাহলে কি তারা ইচ্ছেমতো চলাফেরা করতে পারবে, নাকি তাদের ঐ দ্বীপেই থাকতে হবে?

একে আব্দুল মোমেন: আমার মনে হয় তারা ইচ্ছেমতো ঘোরাফেরা করবে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

Please Share This Post in Your Social Media

© News Net 24 BD All rights reserved 2019
Design & Developed BY Hostitbd.Com