মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৩ অপরাহ্ন

News Headline :
ভারতে চিকিৎসা সেবায় সুযোগ সুবিধা প্রদানে যৌথ সভা  অবৈধভাবে চাল মজুদ রাখার অভিযােগে আবারো মিল মালিককে জরিমানা উন্নত মানের কম্বল পেয়ে খুশি দরিদ্র মানুষেরা এক হাজার দরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র প্রদান করলেন বিজিএমিইএ’র সভাপতি প্রশাসনে বদলীর নির্দেশনায় ঠাকুরগাঁওয়ের চার ওসি, দুই ইউএনও জনপ্রিয় নেতা আলী আসলাম জুয়েলকে নৌকার মাঝি হিসেবে পেতে মড়িয়া ভোটাররা তারেক পাকিস্তান থেকে লোক পাঠিয়ে নৈরাজ্য চালাচ্ছে শান্তি সমাবেশে -যুবলীগ নেতা জুয়েল ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতায় ফ্রি ডেন্টাল ক্যাম্পেইন টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ সাংবাদিক আইনুলের লজ্জা থাকলে আ’লীগে যোগ দিন বিএনপির উদ্দেশ্যে যুবলীগ নেতা-আলী আসলাম জুয়েল

বাবরি মসজিদের ভূমি মামলার রায়, উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি

নিউজ ডেস্ক: ভারতের উত্তরপ্রদেশের বহুল আলোচিত ও প্রায় সাত দশকের পুরোনো বাবরি মসজিদের ভূমির মালিকানা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দেশটির প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ভারতের বর্তমান রাজনীতির অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট আচমকা এই মামলার রায় শনিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানান। অযোদ্ধা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে রাজ্যের উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতেও অতিরিক্ত নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেন্দ্রকুমার তিওয়ারি ও পুলিশের ডিজি ওমপ্রকাশ সিংহকে শুক্রবার দুপুরে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। অযোধ্যাসহ রাজ্যের নিরাপত্তার আগাম কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার কথা হয়। তখনও স্পষ্ট ছিল না, কবে অযোধ্যা মামলার রায়।

রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কিত জমি মামলার রায়ের জন্য অযোধ্যা ইতোমধ্যে দুর্গের চেহারা নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই চার হাজার আধাসেনা পাঠিয়েছে। ৭৮টি রেল স্টেশনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের সব স্কুল-কলেজও বন্ধ রাখা হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বৃহস্পতিবার প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে প্রশাসন এবং পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন। লখনউ এবং অযোধ্যায় দুটি হেলিকপ্টার মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত হয়। উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে শুক্রবার রাত থেকে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন, অযোধ্যায় রায় নিয়ে কোনো অগোছাল মন্তব্য করা চলবে না। নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে অন্য রাজ্যেও। কলকাতার পুলিশ কমিশনার সব থানার ওসিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকার নির্দেশ পাঠিয়েছেন।

উত্তরাখণ্ড, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ ও জম্মুর স্কুল-কলেজও শনিবার বন্ধ রাখা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতিসহ অযোধ্যা বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতির জন্য বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বহুল আলোচিত এই মামলার রায় যে শনিবারই ঘোষণা করা হবে, তা কেউ ভাবেননি। ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ অবসর নেবেন ১৭ নভেম্বর।

আগামী সপ্তাহে সোম ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ছুটি। ফলে ধরে নেয়া হয়েছিল, বুধ থেকে শুক্রবারের মধ্যে কোনও দিন রায় ঘোষণা হবে। কারণ ওই তিনটিই কাজের দিন বাকি ছিল। শনিবার সুপ্রিম কোর্টে ছুটির দিনে এমন রায় ঘোষণা প্রায় নজিরবিহীন। আচমকা শনিবার রায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত আসলে অশান্তি তৈরির পরিকল্পনা করার আগেই তা রোখার চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।

রামমন্দির নির্মাণ বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে থাকলেও মোদি সরকারের অবস্থান ছিল, আদালতই শেষ কথা বলবে। কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলোও আদালতের রায়ে আস্থা রাখার কথা বলেছে। ৬ আগস্ট থেকে টানা ৪০ দিন ধরে অযোধ্যা মামলার শুনানির পর ১৬ অক্টোবর রায় স্থগিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৭৩ সালের কেশবানন্দ ভারতীর মামলার পর আর কোনও মামলায় এত দীর্ঘদিন সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি হয়নি।

অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদের ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমির আইনি লড়াইয়ের সূত্রপাত ১৯৫০ সালে। রামলালার ভক্ত গোপাল সিংহ বিশারদ বাবরি মসজিদকেই রামের জন্মভূমি দাবি করে সেখানে পূজার অধিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। তার আগেই বাবরি মসজিদে রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

পরমহংস রামচন্দ্র দাস সেখানেই পূজার দাবি করে মামলা করেন। ১৯৬১ সালে উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড জমির অধিকার চেয়ে আদালতে যায়। ‘রামলালা বিরাজমান’ নিজেও মামলার পক্ষ হয়ে ওঠেন। দেবতার হয়ে তার ‘সখা’, এলাহাবাদ হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি দেবকীনন্দন আগারওয়ালের প্রধান দাবি, রামের জন্মভূমিই দেবতার চরিত্র পেয়েছে।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে সব মামলা এলাহাবাদ হাইকোর্টে চলে আসে। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখাড়া, রামলালার মধ্যে জমি সমান ভাগে করে দেয়া হোক। এর ফলে হিন্দুরা পায় জমির তিন ভাগের দু’ভাগ। মুসলিমরা এক ভাগ। এর বিরুদ্ধে সব পক্ষই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। রামলালা বিরাজমানের আইনজীবীরা দাবি করেন, রামের জন্মভূমি দেবতা-স্বরূপ। তার ভাগ হয় না। আনন্দবাজার।

Please Share This Post in Your Social Media

© News Net 24 BD All rights reserved 2019
Design & Developed BY Hostitbd.Com