নিউজ ডেস্কঃ হাজী সেলিমের ছেলে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইরফান সেলিমের এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম তাকে এ সাজা দেন। এ সময় ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদুলকে ইসলামেও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মাদক ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখা ও ব্যবহারের দায়ে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে। এর আগে, সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইরফানের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব।
আরও পড়ুন- হাজী সেলিমের ছেলের বাসায় যা পাওয়া গেল
ঘটনাস্থল থেকে সময় সংবাদের বিশেষ প্রতিনিধি ওমর ফারুক জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার দিকে অভিযান শুরু হয়। ৮তলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে অভিযান চলে। এরফানের বাসা থেকে বেশ কিছু অবৈধ জিনিস উদ্ধার করে র্যাব। এর মধ্যে আছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, যেটা অবৈধ। সেটির কাগজপত্র এখনও দেখাতে পারেননি তিনি। এছাড়া, ৫-৬ লিটার মদ ও ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় বাড়িটি থেকে। পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিয়ারের ক্যান।
এছাড়া অভিযানে বিপুল সংখ্যক ওয়াকিটকি সদৃশ যন্ত্রপাতি জাতীয় সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। র্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সময় নিউজকে জানিয়েছেন, তারা ধারণা করছেন ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করা এবং ঢাকা শহরে অবৈধভাবে কোনো সিগন্যালিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হতো। এগুলোর ন্যায্য কাগজপত্র দেখাতে না পারলে সেগুলোও অবৈধ।
উল্লেখ্য, ২৫ অক্টোবর রাতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও ২৬ অক্টোবর ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ।
মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, ইরফান সেলিম, এ বি সিদ্দিক দীপু, জাহিদ, মীজানুর রহমান ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই/তিনজন।
মামলায় আরো বলা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। এরপরই গাড়ি থেকে কয়েকজন বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান।
পরে তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
এর আগে, সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে ভুক্তভোগী নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম নিজেই বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম (৩৭), তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ (৩৫), হাজী সেলিমের মদীনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু (৪৫), গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ (৩০) অজ্ঞাতপরিচয়ের দু-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলব।’
এরপর বের হয়ে ওয়াসিমকে কিলঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।