নিউজ ডেস্কঃ নায়ক রহমানের ১৫তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ে কর্নেট সাংস্কৃতিক সংসদের কার্যালয়ে আলোচনা ও শোক সভা এবং কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিকেলে মাজার জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল আটোয়ারিতে পরিচালনা করেন তার বাল্য বন্ধু আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম নিচি।
সন্ধায় কর্নেট সাংস্কৃতিক কা্র্য্যালয় আমাদের বাজার দোতালায আলোচনা ও শোক সভায় সভাপতিত্ব করেন, নায়ক রহমান স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি, সাইফুল ইসলাম প্রবাল, জেলার উদীচীর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রিজু, কর্নেট সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি, সৈয়দ নুর হোসেন বাবলু, নিশ্চিত পুর থিয়েটারের সাবেক সভাপতি, সৈয়দ মোস্তাকা হোসেন মনিসহ আরও রহমান ভক্তরা।
এসময় বক্তারা বলেন, কিংবন্দন্তি এই নায়কের স্মরনে জাতীয়ভাবে অনুষ্ঠান উদ্দযাপনের আহব্বান জানান।
ষাটের দশকের বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি নায়ক,নায়ক রহমাম পুরো নাম আব্দুর রহমান তিঁনার অভিনিতো সাদা-কালো যুগের সুপার হিট জোয়ার ভাটা’। এই সিনেমার জুটি ছিলেন শবনম। পরেএকই জুটির রঙিন ছবি ‘আমার সংসার’। সেই সময়ের সব সেরা রোমান্টিক জুটি ছিলেন তারা। বাংলা ও উর্দূ ভাষার চলচ্চিত্রের দাপুটে জুটি ও ছিলেন তারা। , বাংলাদেশের
বাংলাদেশের সিনেমায় বিশেষ অবদান রাখা এই মানুষটি আব্দুর রহমান। ১৯৩৭ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রসেয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । সেই সময় কোন মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিরের কেউ অভিনয় করবে ভাবাই যেতো না। ১৯৫৭ সালে ২১ বছর বয়সে সিনেমার টানে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় আসেন রহমান। ঢাকায় এসে খুঁজে বের করেন আরেক কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্যাপ্টেন এহতেশামকে (আবু নুর মোহাম্মাদ এহতেশামুল হক)। তার পরিচালিত ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। ছবিটি ১৯৫৯ সালে মুক্তি পায়। তারপর একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গেছেন।
১৯৬৭ সালে ‘দর্শন’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণের মাধ্যমে পরিচালনায় আসেন তিনি। স্বাধীন বাংলাদেশে অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের নায়ক ছিলেন তিনি। এগুলোর মধ্যে ১৯৮১ সালে দিলীপ বিশ্বাস পরিচালিত ‘অংশীদার’ চলচ্চিত্রটি কালজয়ী হয়ে আছে। তার পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র হলো ‘দর্শন’, ‘কঙ্গন’, ‘যাহা বাজে সেহনাই’ ইত্যাদি। আর বাংলা চলচ্চিত্র ‘নিকাহ’। তিনি উর্দু চলচ্চিত্র ‘চাহাত’, ‘দোরাহা’ ও ‘লগান’-এ অভিনয় করেন।
প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ণ ‘দেবদাস’ নির্মাণ করেন। সেখানে নায়ক রহমান চুনি লালের চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮১ সালে দিলীপ বিশ্বাস পরিচালিত ‘অংশীদার’ চলচ্চিত্রেও তিনি দুর্দান্ত অভিনয় করেন। রহমান অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র ছিল অশোক ঘোষ পরিচালিত ‘আমার সংসার’।
মাসুদ চৌধুরীর পরিচালিত ‘প্রীত না জানে রীত’ চলচ্চিত্রের শুটিং করতে গিয়েসিলেটে গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনি একটি পা হারান। এ দুর্ঘটনায় পা হারানোর পর রহমানের ক্যারিয়ার থমকে যায়। বাংলা, উর্দু ও পশতু ভাষার চলচ্চিত্রে সমানভাবে জনপ্রিয় অভিনেতা রহমান অভিনীত উল্লেখ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো উর্দুতে ‘চান্দা’, ‘তালাশ’, ‘মিলন’, ‘বাহানা’, ‘ইন্ধন’, ‘দর্শন’, ‘জাহাঁ বাজে সেহনাই’, ‘গোরি’, ‘প্যায়াসা’, ‘কঙ্গন, ‘দোস্তি’, ‘নাদান’; বাংলায় ‘এ দেশ তোমার আমার’, ‘রাজধানীর বুকে’, ‘এই তো জীবন’, ‘হারানো দিন’, ‘যে নদী মরু পথে’, ‘দেবদাস’।
কিংবদন্তি অভিনেতা রহমান ১৮ জুলাই ২০০৫ সালে চলে যান না ফেরার দেশে।