নিউজ ডেস্কঃ দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও রোমহর্ষক হামলা করে সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়া জঙ্গিরা এখন নেতৃত্বহীন ও ছত্রভঙ্গ। তাদের তৎপরতা সীমাবদ্ধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু পাতায়। হলি আর্টিজান নৃশংসতার চার বছর পর দেশের জঙ্গি তৎপরতার চিত্র এভাবেই এঁকেছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট প্রধান। তবে, সাম্প্রতিক চীন-ভারত দ্বন্দ্বের ভূ-রাজনৈতিক মারপ্যাচে জঙ্গিদের আবারো বড় ধরনের তৎপরতার আশংকা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। ২০১৬ সালের ১লা জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে নব্য জেএমবির পাঁচ জঙ্গি নৃশংসভাবে হত্যা করে দেশি বিদেশী ২০ জন নিরীহ মানুষকে। ১৫ ঘণ্টার জিম্মিদশায় তারা পায় তাদের কাঙ্ক্ষিত আন্তর্জাতিক প্রচার। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম সিটি বলছে, এটিই ছিল জঙ্গিদের তাৎক্ষণিক লক্ষ। অন্যদিকে দিকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হলি আর্টিজানের ঘটনা বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করে নতুন অঙ্গীকারে। আর তারই আলোকে বড় আকারের ১৭টিসহ বিভিন্ন অভিযানে, নেতৃত্বশূন্য ও ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় শুধু নব্য জেএমবি নয় সবগুলো জঙ্গি সংগঠনই। এ প্রসঙ্গে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশে জঙ্গিবাদী কার্যক্রম এখন আর সেভাবে নেই। তাদের এ মুহূর্তে কোনো সাংগঠনিক কাঠামো নেই। বিচ্ছিন্নভাবে আছে। সিটি প্রধান জানালেন, এ বাস্তবতায় জঙ্গি সংগঠনগুলো আশ্রয় নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তিনি আরো বলেন, তারা এখন অনলাইনে কাজ চালাচ্ছে। এটা পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় বসেই চালানো যায়। হলি-আর্টিজান পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর অর্জন নিয়ে কোন দ্বিমত নেই নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুর রশীদের। তবে সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতায় কোন পক্ষ বাংলাদেশের জঙ্গিদের উস্কে দিতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা। তিনি বলেন, ভারত-চীন-পাকিস্তানের সীমান্ত সমস্যা বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। এই উত্তেজনার মধ্যে জঙ্গিদের ব্যবহার করা হতে পারে। এদিকে হলি আর্টিজান জঙ্গি হানার শুরুতেই ছুটে গিয়ে জঙ্গিদের ছোঁড়া গ্রেনেডে আহত পুলিশ কর্মকর্তা শেখ মারুফ হাসান জানালেন, দায়িত্ব বোধ থেকেই সেদিন ঝুঁকি নিয়েছিলেন তারা। তিনি বলেন, আমরা জানতাম তাদের কাছে অস্ত্র আছে। জেনেশুনেই গিয়েছিলাম। কারণ আমাদের অভিযান পরিচালনা করতেই হতো। বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বরাবরই , আফগানযুদ্ধ, টুইনটাওয়ার হামলা কিংবা সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট প্রতিষ্ঠার মতো নানা আন্তর্জাতিক ঘটনা প্রবাহ দ্বারা প্রভাবিত। বর্তমানে তাদের যেটুকু তৎপরতা আছে, জঙ্গিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক সদিচ্ছা আর জনমত থাকলে তাও ঠেকিয়ে দেয়া যাবে বলে মনে করেন তাঁরা।