নিউজ ডেস্কঃ গেল এক বছরেও কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখনো ঠিক হয়নি। এর মধ্যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যুদ্ধের। লাদাখের সংঘর্ষের পর এবার কাশ্মীরে রণসাজ শুরু করেছে ভারত। প্রস্তুতি অনুযায়ী সেখানে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ১৬ স্কুলে সেনা ঘাঁটি গড়ে তুলতে।
এছাড়াও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় এলপিজি গ্যাস পরিবেশকদের আগামী দু’মাসের জন্য রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার মজুদ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমনই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানা যায়, ভূমিধসের কারণে এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হতে পারে। এজন্যই গ্যাস মজুদ করতে বলা হচ্ছে।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, সরকার যে কারণই দেখাক না কেনও, তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে, কাশ্মীরে বড় কিছুই ঘটতে চলেছে। এদিকে, লাদাখ সংকট নিয়ে কমান্ডার পর্যায়ের তৃতীয় দফায় মঙ্গলবার (৩০ জুন) বৈঠকে বসছে ভারত ও চীন।
আরও পড়ুন: ৫৪ নয়, শেনজেন ভিসা পাচ্ছে ১৪ দেশ, বাদ পড়ল ভারত-চীনও
কাশ্মীরের সঙ্গে কারগিলের সংযোগ জেলা গান্ডারওয়াল পুলিশ সুপারের দফতর থেকে জারি করা ওই নির্দেশনা থেকে জানা যায়, ওই এলাকার ১৬টি স্কুল খালি করে দিতে বলা হয়েছে। সেগুলো নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য ব্যবহার করা হবে। এদিকে একই সাথে সিভিল সাপ্লাই অ্যান্ড কনজিউমার বিভাগের নির্দেশনায় গ্যাসের সিলিন্ডার মজুদ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নরের উপদেষ্টা ফারুক খান বলেন, ‘শীত উপলক্ষে গ্যাসের মজুদ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত বছর থেকে চলমান অস্থিরতার মধ্যে ৩৭০ ধারা বাতিলের আগেও এমনই নির্দেশনা জারি করেছিল প্রশাসন। এছাড়া ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে জঈশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে হামলার আগেও এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। ওই সময় হাসপাতালগুলোকে ওষুধ মজুদ রাখা ও ডাক্তার, নার্স, কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছিল। এখন নতুন করে গ্যাস মজুদ ও স্কুল খালির করার নির্দেশনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে কাশ্মীরবাসীর মনে।
এদিকে সরকার জানিয়েছে, দুইটি বিষয় নিয়েই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ের ওপর বার বার ধস নামার
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রক্ষার ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। বারবার দুদেশের প্রতি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে দুপেক্ষেরই। গত সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গোলাবর্ষণে ভারত-পাকিস্তান দু’দেশেরই নাগরিকের হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ১৪ বছরে ৫৩৫ নৌ-দুর্ঘটনা, ৬ হাজারেরও বেশি প্রাণহানি
পাকিস্তানের দ্বন্দ্বের কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের চরম বিরোধিতা চলছে ভারতের। সম্প্রতি লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারান ভারতীয় ২০ সেনা। এঘটনায় আহত হন অন্তত ৭৬ জন। তবে চীনের কতজন হতাহত হয়েছেন তা জানা যায়নি। এরপর থেকে দুই পক্ষই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে সীমান্তে।
সীমান্তে সংঘর্ষের পর গত ৬ জুন প্রথম দফার বৈঠকে বসেন ভারত ও চীনের সেনা কমান্ডাররা। সেখানে অস্ত্র ব্যবহার করার চুক্তি না থাকায় গলওয়ানে লাঠালাঠি ও পাথর ছোড়াছুড়ি হয়েছে। সংঘর্ষের পরেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) লঙ্ঘন থেকে বিরত হয়নি চীন। ২২ জুন কোর কমান্ডার স্তরের দ্বিতীয় বৈঠকে সেনা সংখ্যা কমানো এবং ‘মুখোমুখি’ অবস্থান থেকে পিছিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হলেও তা উপেক্ষা করছে পিপলস লিবারেশন আর্মি।
সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে লাদাখ সংঘর্ষস্থলের অদূরে গলওয়ান নদীর তীরে চীনা ছাউনির সংখ্যা গত এক সপ্তাহে দ্বিগুণ হারে বেড়েছে।