নিউজ ডেস্কঃ এবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শুক্রবার (২৭ মার্চ) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সময় নিউজের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি শোয়েব কবির।
তিনি জানান, যুক্তরাজ্যে খুব দ্রুতই করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ব্রিটেনে একদিনে আরও ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৭৮ জনে। দেশটিতে তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হলেও বাংলাদেশি অধ্যুষিত হোয়াইট চ্যাপেলে নিয়ম মানছেন না অনেকে। লকডাউনে পুরো ব্রিটেন যেখানে স্থবির হয়ে আছে। কিন্তু সেখানে ব্রিটেনের বাংলাদেশি পাড়াখ্যাত এই হোয়াইট চ্যাপেলের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে লোকজন বাসা থেকে বের হচ্ছেন হরহামেশাই।
একজন বলেন, আমাদের বাঙালি পাড়ায় লোকজন বেশি করে হাঁটাহাঁটি করছে। অন্য সব জায়গায় এতোটা না।
এভাবে চলাফেরার কারণে বাংলাদেশি কমিউনিটি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনারও প্রবাসীদের এ সময়ে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
লন্ডন বাংলাদেশ হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, এক সাথে যোগাযোগ করবেন না। এমন কি একসঙ্গে নামাজ, জমায়েত যেন না করা হয় সেজন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও গবেষক আদনান পাভেল বলেন, আমরা যদি এ নির্দেশনা না মেনে চলি, তাহলে ব্রিটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যারা বসবাস করছেন তারা বাজেভাবে আক্রান্ত হবেন।
যুক্তরাজ্যে কোভিড-নাইনটিনে আক্রান্ত ছয় জন বাংলাদেশি মারা গেছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। পরিসংখ্যান বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৯৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি। ইতোমধ্যে করোনা কেড়ে নিয়েছে ২৪ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ। আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখেরও বেশি।
এদিকে, শুক্রবার (২৭ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, সারাবিশ্বে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ৮৩ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩২ হাজার ১৫০ জনে। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৩২৬ জন।
এ মুহূর্তে সারাবিশ্বে আক্রান্ত অবস্থায় আছেন ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৭৪১ জন, যাদের মধ্যে ১৯ হাজার ৩৫৭ জনের অবস্থা গুরুতর। বাকি ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩৮৪ জনের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনায় ১৬ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, সুস্থ হয়েছেন ৮৪ শতাংশ মানুষ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের দিক থেকে চীন-ইতালিকে ছাড়িয়ে এক নম্বরে উঠে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ হাজার ৫২০ জন, যা গোটা বিশ্বের মধ্যেই সর্বোচ্চ। সেখানে মোট প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯৭ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৬৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এখনও চিকিৎসাধীন ৮২ হাজারের বেশি। এদের মধ্যে অন্তত ২ হাজার ১১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে চীন। করোনার উৎস দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৩৪০ জন। মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২৯২ জন।
করোনা মহামারিতে রীতিমতো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইতালি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৭১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সেখানে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২১৫ জনে। একদিনে নতুন আক্রান্ত ৬ হাজার ১৫৩ জন, মোট ভুক্তভোগী ৮০ হাজার ৫৮৯ জন।