নিউজ ডেক্সঃ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে একজন অমুসলিম শরণার্থীকেও তাড়ানো হবে না বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
কলকাতার ইনডোর স্টেডিয়ামের এক জনসভায় তিনি বলেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, শিখ নয়, তাড়ানো হবে অনুপ্রবেশকারীদের।
অমিত শাহ’র কট্টর হিন্দুত্ববাদী বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছে তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে কোনো কাজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো পশ্চিমঙ্গ সফরে যান কেন্দ্রীয় ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির-বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। কলকাতার বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য বিজেপি আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি।
প্রতিবেশী রাজ্য আসামে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় ১৯ লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়ায় পশ্চিমবঙ্গেও এনিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয় আর আতঙ্ক। কলকাতায় এসে জাতীয় নাগরিক তালিকা এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে কথা বললেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দিলেন কট্টর হিন্দুত্ববাদের বার্তা। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে যাওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বললেও এদিন মুসলিম জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব নিয়ে মুখ খোলেননি অমিত শাহ।
অমিত শাহ বলেন, আমি বাংলার জনতাকে সত্যিটা বলতে এসেছি। মমতাজি বলছেন, এনআরসি হলে লাখ লাখ হিন্দু শরণার্থীকে বাংলা ছেড়ে যেতে হবে। এর চেয়ে বড় কোনও মিথ্যা হয় না। আমি সবার সামনে আশ্বস্ত করছি, সব শরণার্থীকে আশ্বস্ত করছি, যাঁরা এ দেশে চলে এসেছেন, তাঁদের কাউকে ভারত ছাড়তে বাধ্য করা হবে না।
তিনি বলেন, এনআরসি নিয়ে তৃণমূল যা বলছে, তা ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই মিথ্যাটা
ছড়ানো হচ্ছে বাংলার মানুষকে উস্কে দেওয়ার জন্য। ভারতে যত হিন্দু, শিখ,
বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান এসেছেন, তাঁদের সবাইকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া হবে।
কিন্তু একজন অনুপ্রবেশকারীকেও ভারতে থাকতে দেয়া হবে না।
বিজেপি নেতার এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গে বিভেদ সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিভেদ সৃষ্টি না করতে বিজেপির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে অন্য দেশ থেকে আশ্রয় নেয়া সব ধর্মের লোকজনকে আশ্রয় দেওয়া হলেও, বিশেষ একটি ধর্মের অনুসারীদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে –অমিত শাহ’র এ ধরনের বক্তব্য সংবিধান-বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।