• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম

শিবির ক্যাডারদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন ছাত্রদল করা ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম

সাংবাদিকের নাম / ৩৮ জন দেখেছেন
আপডেট : সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০

নিউজ ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন কুড়িগ্রামে সাংবাদিক পেটানো ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীন। সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের মেইন বিল্ডিংয়ে শিবির ব্লকের দিকেও নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার।

আরডিসি নাজিম উদ্দীনের ঢাবির সহপাঠী ও ঘনিষ্ট কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই সময় শিবিরের সঙ্গে বেশ সখ্যতা ছিল নাজিমের। শিবির ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডাও দিতেন তিনি। তবে, ছাত্রদলের অ্যাক্টিভ কর্মী হিসেবেই সবাই তাকে জানতেন। ছাত্রজীবন থেকেই ‘বদমেজাজি’ নাজিম মেধাবিও ছিলেন। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন নাজিম উদ্দীন।

নাজিম উদ্দীনের বাবা নেছার আহমেদ জামায়াতের সমর্থক ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ভরতপুরে। অতিদরিদ্র নেছার আহমেদ উপজেলার কাশিপুরে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। ভাই-বোনের মধ্যে নাজিম উদ্দীন বড়।

তার এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, খুবই কষ্ট করে নাজিমকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন তার বাবা। তার স্কুল-কলেজের পরীক্ষার ফি’টাও এলাকাবাসীর কাছ থেকে জোগাড় করে দিতেন। বাবা গরিব ও নাজিম বেশ মেধাবি হওয়ায় স্কুলের বেতনও নিত না কর্তৃপক্ষ।

মনিরামপুর সরকারি পাইট উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি ও মনিরামপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন নাজিম উদ্দীন। কলেজে পড়াকালীনই ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।

নাজিম উদ্দীন যখন মনিরামপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। তখন ওই কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ছিলেন সন্দ্বীপ ঘোষ। তিনি সময় সংবাদকে বলেন, ‘নাজিম উদ্দীন ছাত্রদল করতো। সে নিয়মিত ছাত্রদলের মিছিলে যেত।’

তিনি জানান, নাজিম উদ্দীন মামা বাড়িতে মানুষ হয়েছেন। তার মামারাও এন্টি-আওয়ামী লীগ।

এ বিষয়ে জানার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভাই আর কত, আমি তো আর পারছি না। এখন বাসায় এলাম।’

কলেজ জীবনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘ভাই আমি ব্যস্ত, পরে কথা বলি।’ বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান দাবি করেন, নাজিমের পরিবার (বাবা ও মামারা) মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের রাজনীতি করেন না।

উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইউনুস আলী বলেন, ‘তারা (নাজিমের পরিবার) বিএনপি জামায়াতের লোক।’ তবে, ওই ইউনিয়নের মেম্বর গাজী মনসুর রহমান দাবি করেন, ‘তারা (নাজিমের পরিবার) রাজনীতির সাথে যুক্ত নয়।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগের কেউ কেউ বলছেন, নাজিমের পরিবার আগে যাই করতো না কেনো, এখন আওয়ামী লীগ করে।

এদিকে, সোমবার (১৬ মার্চ) দুপুরে মহম্মদপুর বাজারে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাংবাদিক নির্যাতন করে সমালোচিত কুড়িগ্রামের কুখ্যাত আরডিসি ও মাগুরার মহম্মদপুরের সাবেক এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দীনকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।

দায়িত্ব পালনকালে মহম্মদপুরের জনসাধারণের ওপর অযথা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা, ক্ষমতার অপব্যবহার করে উৎকোচ আদায় এবং অসংখ্য নিরীহ জনগণের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী ও সাধারণ জনগণ। তার চাকরিচ্যুত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন মানববন্ধনে উপস্থিত সবাই।

কুড়িগ্রামে বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে ধরে এনে গুলি করে হত্যার হুমকি ও বিবস্ত্র করে পেটানো ম্যাজিস্ট্রেট নাজিমের শাস্তি দাবি করে অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। ফেসবুকে নতুন করে ভাইরাল হয়েছে কক্সবাজারে এক বৃদ্ধকে শার্টের কলার ধরে নিয়ে যাওয়া ভিডিও।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য ‍রুদ্র সাইফুল ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য রিফাত মোর্তজা তাদের ফেসবুকে নাজিম উদ্দীনের বিয়ের সময়কার একটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘নতুন বরের সাজে দেখতে গোবেচারা টাইপ হলেও এই ছেলে খুবই ভয়ংকর, ওর নাম নাজিম উদ্দিন কুড়িগ্রামের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব), বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিকে মধ্যরাতে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ার দিতে চেয়েছিলো, পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায়; এটাই ওর প্রথম অপকর্ম নয়।

তিন বছর আগে কক্সবাজারে চাকরিকালীন সময়ে একজন বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধাকে কলার চেপে ধরে নির্যাতন করার অপরাধে পানিশমেন্ট পোস্টিংয়ে খাগড়াছড়ি ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল, ছাত্রদলের ছেলেদের সঙ্গে ঘোরাফেরা করার অভিযোগ আছে; ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা ওর প্রতিদিনের রুটিন।

ওর পরিবারের সদস্যদের স্বাধীনতা বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিরোধী আন্দোলনেও ইন্দন দেওয়ার ঢের অভিযোগ আছে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে, যশোরের মনিরামপুরের কাশিপুর গ্রামের সবাই ওর পরিবারকে জামায়াতপন্থি হিসেবেই চেনে-জানে; যে অপরাধে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানাকে বদলি করা হয়েছে ঠিক একই অপরাধে নাজিম উদ্দিনও অপরাধী।

নাজিম উদ্দিনের কঠিন শাস্তি দাবী করছি, সেই সঙ্গে ওর গোয়ার গোবিন্দ টাইপ আচরণের লাগাম টেনে ধরা উচিত, দুই-একটা থার্ডক্লাসের জন্য পুরো প্রশাসন সাফার করতে পারে না, তাই প্রশাসনিক কর্তাদেরই ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকের সকল দুর্নীতির সহযোগিতাকারী ছিলো নাজিম উদ্দিন; দুদক চাইলে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে।’


এধরনের আরও সংবাদ

Editor: Ataur Rahman
News editor : Joherul Islam
email: newsnat24@gmail.com
Phone: 01717253362, 01744367842
N.C Road, Thakurgaon.