নিউজ ডেস্কঃ ইতালিতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর পরপরই দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় ১০টি শহরে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল, কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
করোনা আতঙ্কে জনমানবহীন রাস্তাঘাট, এমন চিত্র ভাবতেই মনে হতে পারে চীনের উহানের কথা। তবে এই দৃশ্য চীনের নয়, ইতালির লোদি প্রদেশের। যেখানে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে আছেন সবাই।
তারা বলেন, ভয়াবহ অবস্থা, বয়স্করাই বেশি আক্রান্ত হওয়ায় খুবই আতঙ্কে আছি। এখানে সবার মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। কেউ বাইরে বের হতে চাচ্ছে না।
ইতালিতে সম্প্রতি এ ভাইরাসে আক্রান্ত ১৪ জনের মধ্যে এমন ব্যক্তিও রয়েছেন যিনি কখনও চীনে যাননি। ফলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শুক্রবার অঞ্চলটির জনসমাগম হয় এমন জায়গাগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইতালিতে সম্প্রতি আক্রান্ত ১৪ জনের সবাই লোম্বার্ডি এলাকার বাসিন্দা। সেখানে জানুয়ারির শেষ দিকে চীন থেকে ফেরা এক ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকের পর ৩৮ বছরের আরেক ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। ওই ব্যক্তি যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন সেখানকার পাঁচ চিকিৎসক ও নার্স এবং অন্য বেশ কয়েকজন রোগীও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হন। ওই এলাকার একটি ক্যাফেতে যাওয়া তিন ব্যক্তির শরীরেও এ ভাইরাসের সন্ধান মিলে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নড়েচেড়ে বসে প্রশাসন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে শতাধিক মানুষকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। তাদের পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের অর্ধলক্ষাধিক মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক সপ্তাহের জন্য যাবতীয় উৎসব পালন কিংবা গির্জা বা খেলাধূলায় অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বিশ্বের ৩২টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। এ অবস্থায় দিন দিন আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে নতুন করে ১০৯ জন মারা গেছেন। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের শনিবারের তথ্য অনুযায়ী, হুবেই প্রদেশে নতুন করে আরও শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৩’শ ছাড়ালো। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ।
এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ইরানে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪ জনে।
এরমধ্যেই লেবানন ও ইসরাইলে প্রথমবারের মতো করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আর এক দিনের মাথায় দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কভিড নাইনটিন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হচ্ছে। তবে এখনি যথাযথ পদক্ষেপ নিলে প্রতিরোধ সম্ভব বলেও মনে করে সংস্থাটি।