নিউজ ডেস্কঃ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক আদালতের রায় অবশ্যই মিয়ানমারকে মানতে হবে- এ রায় প্রত্যাখ্যান করার কোনো সুযোগ নেই। এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। সেখানে যত জন বিচারক ছিলেন তারা সর্বসম্মতভাবে এ রায় দিয়েছেন।
শনিবার (২৫ জনুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর মাঝে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ ও ক্যান্সার রোগীদের অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারে মিয়ানমারকে ৪ মাস পর এ রায়ের কতটুকু বাস্তবায়ন করেছে তার রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, যে সমস্ত দেশগুলো এ রায়ের আগে মিয়ানমার যে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করেছে এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করেছে তা নিয়ে এতদিন দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল। এ রায়ের পর তারা মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করবে। এতদিন যারা মিয়ানমারকে এই কাজ থেকে নিবৃত্ত করার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োগ করেনি তারা রোহিঙ্গাদের যাতে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিয়ে যায় সেজন্য মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে যেভাবে মানুষ হত্যা করেছে, ছোট শিশুদের হত্যা করেছে, সন্তানের সামনে মাকে ধর্ষণ করেছে। নির্বিচারে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে, সেটা মানবতাবিরোধী অপরাধ। সেই অপরাধের বিরুদ্ধে ওআইসির সকল সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষে গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট অব জাস্টিসে) মামলা করেছে। সেই মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক রায় হয়েছে।
তিনি বলেন, সেই মামলায় আন্তর্জাতিক আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে বলেছে মিয়ানমারকে অবিলম্বে মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ করতে হবে। সেখানে যে আরও রোহিঙ্গারা রয়েছে তাদের যাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হয় এবং ইতিপূর্বে যে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে সেগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য যে সমস্ত বাহিনী অপরাধ সংগঠিত করেছে তারা যাতে আর কোনভাবেই এ ধরণের কাজে যুক্ত না থাকে তা রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা বৃত্তি হিসেবে প্রাথমিকে ১০১ জন শিক্ষার্থীকে ১২শ’ টাকা করে, ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ৯৪ জন শিক্ষার্থীকে ১৫শ’ টাকা করে, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ৯ জন শিক্ষার্থীকে ৩২শ’ টাকা এবং ডিগ্রি ও অনার্স পর্যায়ে ২ জন শিক্ষার্থীকে ৪ হাজার ৫শ’ টাকা করে দেয়া হয়।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ২শ’ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপকরণ এবং ২টি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সামগ্রী এবং ৩০ জনকে বাইসাইকেল দেয়া হয়। এছাড়া ২১ জন ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোক, প্যারালাইসিস ও জন্মগত হৃদরোগীদের র্আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়।
উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ইউএনও মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান চৌধুরী, পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার প্রমুখ।