নিউজ ডেক্সঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এ দুর্ঘটনায় শোক জানিয়েছেন সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এরইমধ্যে দুর্ঘটনা তদন্তে ৩টি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান রেলসচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন।
তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় অধিবাসীরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। দুটি রিলিফ ট্রেন উদ্ধার শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষের পর ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কান্তি দাস।
সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেল স্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা এবং সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রেলসচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন কমিটি গঠন বিষয়ে বলেন, রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুটি ও জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলের দুটি কমিটির একটিতে প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (পূর্বাঞ্চল) মিজানুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। চার সদস্যের অপর কমিটির প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনকে। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিতু মরিয়মকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
রেলসচিব জানান, ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
দুর্ঘটনার ব্যাপারে একটি ট্রেনের সিগন্যাল অমান্য করার যে অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রেলসচিব বলেন, তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তদন্তের আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।
স্টেশন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মন্দবাগ রেল স্টেশনে দাঁড়ানোর জন্য সিগন্যাল দেয়া হয়। ওই সিগন্যালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস প্রধান লেন থেকে ১ নম্বর লাইনে দাঁড়ানো শুরু করে। ট্রেনটির ছয়টি বগি ১ নম্বর লাইনে উঠতে পারে। অপর বগিগুলো প্রধান লেনে থাকা অবস্থায় তূর্ণা নিশীথা সিগন্যাল অমান্য করে ওই ট্রেনের ওপর উঠে যায়। এতে উদয়নের তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সবাই উদয়নের যাত্রী ছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, ঘটনাস্থলের কাছে বায়েক শিক্ষা সদন উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সেখানে মরদেহ রাখা হয়েছে। আর কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ জনের মৃতদেহ রাখা রয়েছে। এরমধ্যে একজন পুরুষ, একজন নারী ও এক শিশু রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নারী ও পুরুষের আর কুমিল্লা জেলা সদর হাসপাতালে একজন পুরুষের মরদেহ রয়েছে। পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে।