মহান আল্লাহ পাক পূর্ববর্তী উম্মতদের মতো উম্মতে মোহাম্মাদীর ওপরও কুরবানি করাকে অপরিহার্য করেছেন। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে: ‘আর আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানির পশু জবেহ করার নিয়ম করে দিয়েছি, যাতে তিনি তাদের জীবনোপকরণ স্বরূপ যেসব চতুস্পদ জন্তু দিয়েছেন, সে সবের ওপর তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে, তোমাদের উপাস্য এক উপাস্য। কাজেই তার কাছে আত্মসর্ম্পণ করো এবং বিনীতদের সুসংবাদ দাও’। (সূরা আল হজ্জ : আয়াত ৩৪)।
এই আয়াতে কারীমায় সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে, উম্মতে মোহাম্মাদীকে কুরবানির পশু জবেহ করার আদেশ দেয়া হয়েছে, তা কোনো নতুন আদেশ নয়। পূর্ববর্তী উম্মতদেরও এ ধরনের আদেশ দেয়া হয়েছিল। এই কুরবানির পশু ১০ জিলহজ্জ তারিখে জবেহ করা হয়, যা হজ্জের আবশ্যিক আমলের অন্তর্ভুক্ত এবং সাধারণ মুসলিম মিল্লাতের জন্য তাদের ওপর আরোপিত ওয়াজিব আদায়ের সুবর্ণ সুযোগও বটে।
তাছাড়া আলোচ্য আয়াতে কারীমায় ‘আলয়াম’ শব্দের দ্বারা উট, গরু, ছাগল, মেষ, দুম্বা ইত্যাদি প্রাণীকে বোঝানো হয়েছে। এগুলো জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমনকি জবেহ যেন একমাত্র তারই উদ্দেশ্যে হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। কারণ তিনিই তো এ রিজিক তাদের দিয়েছেন।
আলোচ্য আয়াতে কারীমার শেষাংশে বিনীতদের সুসংবাদ দেয়ার ঘোষণা জারি করা হয়েছে। আমলে বিনীত কারা? এ সম্পর্কে ইমাম দাহহাক ও কাতাদাহ (রহ:) বলেন, যারা বিনয়ী তারাই বিনীতদের অন্তর্ভুক্ত। ইমাম মুজাহিদ (রহ:) বলেন যে সকল লোক সন্তুষ্টচিত্তে কুরবানি করে তারাই বিনীত। ইমাম মুফিয়ান সাওরী (রহ:) বলেন, যারা সুখে-দুঃখে, সাচ্ছন্দ্যে ও অভাব-অনটনে আল্লাহর ফায়সালা ও তাকদীরে সন্তুষ্ট থাকে, তারাই বিনীত।
আমর ইবনে আউস (রহ:) বলেন, এমন লোকদের বিনীত বলা হয়, যারা অন্যের ওপর জুলুম করে না। কেউ তাদের ওপর জুলুম করলে তারা তার প্রতিশোধ নেয় না। মোটকথা, বিনীতদের মাঝে তিনটি গুণের সমাবেশ লক্ষ করা যায়।
যথাÑ (এক) তারা অহঙ্কার ও আত্মম্ভরিতা পরিহার করে আল্লাহর সামনে অক্ষমতা ও বিনয়াবনতভাব অবলম্বন করে। (দুই) তারা বন্দেগী ও দাসত্বে একাগ্র ও একনিষ্ঠ হয়ে যায়। (তিন) তারা আল্লাহর ফায়সালায় সন্তুষ্ট ও পরিতুষ্ট থাকে। মহান আল্লাহ পাক আমাদের বিনীতদের কাতারে স্থান দান করুন, এ প্রার্থনাই করছি। আমীন!
আরএম/নিউজনেটটুয়েন্টিফোন ডটকম