• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম

ঠাকুরগাঁওয়ে চেক প্রতারণার মামলা নিঃশ্ব দরিদ্ররা দেখানো হয় ঋণের লোভ

সাংবাদিকের নাম / ৯২ জন দেখেছেন
আপডেট : রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নিউজ ডেক্সঃ সুবিধামত জায়গা ভাড়া নিয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষকে আকৃষ্ট করতে লোভনীয় অফারে ঝুলিয়ে দেয়া হয় ব্যানার। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ দেয়ার নামে ব্লাংক চেক হাতিয়ে ধরিয়ে দেয়া হয় দশ-পঞ্চাশ হাজার টাকা। টাকা দেয়ার চার মাসের মাথায় উধাও হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। পরে ঋণ নেয়া ব্যক্তিদের নামে একে একে আসতে থাকে চেক প্রতারণার মামলা।
করোনার সময় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ভগতগাজী এলাকায় অগ্রনী-ই কমার্স লিমিডেট নামে একটি অফিসের জন্য বাড়ি ভাড়া নেয় ওমর আলী নামে এক ব্যক্তি। এলাকার মানুষকে ঋণ প্রদানে চটকদার প্রচরণা চালান।
সাপ্তাহিক কিস্তিতে এক লাখ টাকা জমা করলেই ছয় বছরের মাথায় দেয়া হবে দুই লাখ টাকা। এছাড়া বসতবাড়ী, আবাদি জমি, দোকানঘর, টিভি, ফ্রিজ, যানবাহনসহ বিনিয়োগ করা হবে অনেকছিুই। পাশাপিাশি দেয়া হবে ঋণ। এমন লোভনীয় প্রচারণায় মুগ্ধ হয় স্থানীয়রা। টাকা জমানোর পাশাপাশি অফিস প্রধাণ ওমর আলীর নির্দেশে বøাংক চেক জমা দিয়ে ঋণের জালে পাঁ দেন এলাকার দরিদ্ররা।
জনপ্রতি দশ থেকে পঞ্চাশ  হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদানের চার মাসের মাথায় সটকে পরেন অফিস প্রধাণসহ অন্যান্যরা। এরপর আদালত থেকে একেক জনের নামে এক থেকে ছয় লাখ টাকার চেক প্রতারণা মামলার কাগজ আসলে জানতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছে। প্রত্যেক ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে হাওলাদ দেখিয়ে ওমর আলীর করা মামলায় এখন নিঃশ্ব হয়ে আদালত চত্বরে ঘুরছেন। আদালতে হাজিরা দিতে এসে ওমর আলীকে পেয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে বিচার দাবি করেন সবাই।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কেউ পাঁচ হাজার, কেউ দশ হাজার. কেউ আবার পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু ঋণ নেয়ার পর কয়েকটি কিস্তিও দেয়া হয়। পরে হঠাৎ অফিসের লোকজন উধাও হয়ে যায়। কিস্তি দেয়ার জন্য ওমর আলী ও তার লোকজনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলেও তারা কিস্তি নিতে আসেন নি। পরে শুনি এর ওর বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার মামলা হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ ঋণ নিছি পাঁচ-দশ হাজার টাকা। কিন্তু ওমর আলী ব্যক্তি বাদি হয়ে আমাদের ১১ জনের নামে মামলা করেছে। প্রতিজনকে ১ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত মামলা হাওলাদ দেখানো হয়েছে। যা সম্পূর্ন মিথ্যা। আমরা প্রশাসনের কাছে এর সুস্ঠ তদন্ত চাই। সেই সাথে তার বিচার দাবি করছি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের নিময়ামতপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে অভিযুক্ত ওমর আলী জানান, টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত মামলা চলমান থাকবে। কিছু লাভের আশায় তাদেরকে টাকা হাওলাদ দেয়া হয়েছিল।
আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু হাসান জানান, ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে নিরীহ মানুষদের ব্যাংকে পাঠিয়ে একাউন্ট খুলিয়ে ঋণ দেয়ার নামে চেক হাতিয়ে নেয় ওমর আলী। পরে ব্যক্তি বাদি হয়ে সবার বিরুদ্ধে চেক প্রতারনার মামলা করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন চৌধুরী জানান,
এক ব্যক্তি একাধিক মামলা করেছেন। কেন করেছেন। তার আয়ের উৎস কি? সংশ্লিস্ট দপ্তরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়ে বিষয়টি বিজ্ঞ জেলা জজ সাহেবের নজরে আনার কথা জানান আইনজীবী সমিতির নেতা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান জানান, অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হলে তা বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে ভুক্তোভোগীরা তার বিরুদ্ধে মামলা করলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, ২০২১ সালের জানুয়ারীতে অফিসটি স্থাপনের পর মাত্র চার মাস পরিচালনা করে ভগতগাজীসহ আশপাশের অর্ধশত মানুষের কাছে সঞ্চয় সংগ্রহের পাশাপাশি ঋণ দিয়ে ব্লাংক চেক হাতিয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মামলা করেন ওমর আলী।


এধরনের আরও সংবাদ

Editor: Ataur Rahman
News editor : Joherul Islam
email: newsnat24@gmail.com
Phone: 01717253362, 01744367842
N.C Road, Thakurgaon.