নিউজ ডেস্কঃ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বলি ইন্ডাস্ট্রিতে খুবই সাধারণ বিষয়। আকছাড় এই ধরনের খবর পাওয়া যায়। একটা সম্পর্ক ভেঙে নতুন সম্পর্ক জোড়া লাগতে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু এর জন্য ইন্ডাস্ট্রি কখনও কাউকে শাস্তি দিয়েছে বলে সে ভাবে শোনা যায়নি। কিন্তু জানেন কি এক বিবাহিত অভিনেতার সঙ্গে প্রেম করার ‘অপরাধে’ কন্নড় ইন্ডাস্ট্রি এক বার এক জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল? তিন বছরের জন্য তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল! নীতিপুলিশের শিকার হয়েছিলেন অভিনেত্রী নিকিতা ঠুকরাল। তিনি কন্নড় ইন্ডাস্ট্রির অত্যন্ত পরিচিত মুখ। মুম্বইয়ে একটি পঞ্জাবি পরিবারে জন্ম নিকিতার। মু্ম্বইয়ের একটি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেন তিনি।মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও নিকিতার পড়াশোনা নিয়ে আর এগোনোর ইচ্ছা ছিল না। তাই স্নাতকোত্তর শেষ করেই তিনি মডেলিংয়ে ঢুকে পড়েন।২০০২ সালে ‘আতি রহেগী বহারেঁ’ নামে একটি হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে সে ভাবে কিছু করে উঠতে পারছিলেন না। বরং কন্নড়, তেলুগু এবং মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এক বার জুহুর একটি রেস্তরাঁয় বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলেন নিকিতা। তখন সেখানে হাজির ছিলেন প্রযোজক ডি রামানায়ডুও। নিকিতার থেকে কিছু দূরেই ছিলেন তিনি। নিকিতাকে দেখেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ওই প্রযোজক নিজের একটি ছবির উপরই কাজ করছিলেন। রেস্তরাঁর মধ্যেই নিকিতাকে সেই ছবির প্রস্তাব দেন তিনি।ছবিটি ছিল ২০০২ সালের ‘হ্যায়’। বক্স অফিসে ছবিটি খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি ঠিকই, কিন্তু নিকিতার জন্য ইন্ডাস্ট্রির দরজা খুলে দিয়েছিল। ওই বছরই আরও দু’টি দক্ষিণী ছবিতে তিনি সুযোগ পেয়ে যান। কন্নড় ইন্ডাস্ট্রিতে দ্রুত নিকিতা প্রথম সারির অভিনেত্রী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালের একটি ছবি তাঁর জীবন পাল্টে দিয়েছিল। ওই বছর ‘প্রিন্স’ নামে একটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল তাঁর। তাঁর বিপরীতে ছবিতে অভিনয় করেছিলেন দর্শন। ছবি মুক্তির পরও দর্শন এবং নিকিতার রসায়ন নিয়ে চর্চা থামেনি। নিকিতা এবং দর্শনের মেলামেশাও বন্ধ হয়নি। প্রথম দিকে বিষয়টিকে খুব একটা পাত্তা দেননি দর্শনের স্ত্রী বিজয়লক্ষ্মী। পরে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন স্বামী দর্শন ক্রমে নিকিতার দিকে ঝুঁকছেন। এর পরই ব্যবস্থা নেন তিনি। দর্শন এবং নিকিতার বিরুদ্ধে ইন্ডাস্ট্রিতে অভিযোগ জানান। নিকিতার বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীকে সংসারবিমুখ করার অভিযোগ করেছিলেন। স্বামী দর্শনের বিরুদ্ধে নিকিতার কথায় তাঁকে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগও জানিয়েছিলেন তিনি।অভিযোগের ভিত্তিতে দর্শনের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। নিকিতার কী পরিণতি হয়েছিল? কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তিন বছরের জন্য তাঁকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল।মনে করা হয় নিকিতাই প্রথম এবং একমাত্র অভিনেত্রী যাঁকে বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্য ঘোষিত ভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনা সামনে আসার পরই হইচই পড়ে যায় ইন্ডাস্ট্রিতে। নিকিতার বিরুদ্ধে যেমন অনেককে সরব হতে দেখা যায় তেমন নিকিতার পাশেও দাঁড়ান অনেকে। ইন্ডাস্ট্রির নীতিপুলিশির বিরোধিতাও করতে দেখা যায়। অবশেষে নিকিতাকে ছাড়পত্র দিতে বাধ্য হয় কন্নড় ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু এই ঘটনা নিকিতার ভাবমূর্তিকে এতটাই প্রভাব ফেলেছিল যে তার পর থেকে ভাল সুযোগ তিনি পাচ্ছিলেন না। ২০১৭ সালে নিকিতা বিয়ে করে নেন। কিছু দিন ইন্ডাস্ট্রি থেকে দূরেও চলে যান। ২০১৮ সালে তাঁর শেষ কন্নড় ছবি মুক্তি পায়। তার পর থেকে এখনও কোনও ছবি করেননি তিনি। ২০২০ সালে তাঁকে একটি ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছিল।
সুত্র-আনন্দবাজার