• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম

ঠাকুরগাঁওয়ে গম বরাদ্দে কৃষক পাচ্ছে তিনশ ব্যবসায়ীর রমরমা বাণিজ্য

সাংবাদিকের নাম / ৩৪ জন দেখেছেন
আপডেট : রবিবার, ১৩ জুন, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারের গম সংগ্রহ অভিযানে এবার ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন সরকার দলীয় নেতা ও ব্যবসায়ীরা। কৃষকের ঘরে গম না থাকলেও কৌশলে জেলার কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে কৃষি কার্ডের মাধ্যমে গম সংগ্রহ অভিযান শেষ করতে যাচ্ছে। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষকের কাছ থেকে। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেছেন বলে জানান সংশ্লিস্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন।
অনুসন্ধানে জানান গেছে, জেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সদরের আকচা ইউনিয়নের তিনটি ব্লকের প্রায় ২ হাজার কৃষকের তালিকা প্রণয়ন করে খাদ্য বিভাগকে। সেই তালিকা অনুযায়ী লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচিত করা হয় সংশ্লিস্ট খাদ্য গুডামে সরকার নির্ধারিত মুল্যে গম প্রদানে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যেসময় গম সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। তার আগেই জেলার অধিকাংশ কৃষকের ঘর থেকে গম বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বাজারে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের তথ্য মতে, সরকারের নির্দেশে গত মে মাস থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে লটারির মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে গম সংগ্রহ অভিযানের কার্যাক্রম শুরু করা হয়। যা এখনো চলমান রয়েছে। আগামী ৩০ জুন সংগ্রহ অভিযান শেষ হবে।
কিন্তু এ জেলার পাঁচটি উপজেলার অধিকাংশ উপজেলায় গম সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হয় নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে।
এ সুযোগে জেলার ব্যবসায়ীরা সরকার দলীয় নেতার হাত ধরে গম সংগ্রহ অভিযানে মাঠে নামে। অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা সদরের ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল (ডিও মোস্তফা) সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি প্রমর্থ রায়কে দিয়ে ওই এলাকার কৃষককে ভুল বুঝিয়ে সরকার ভুতুর্কি দিচ্ছে। তাই কৃষি কার্ড নিয়ে যেতে হবে সদরের খাদ্য গুডামে। আর গুদাম কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চেকের পাতা ও অন্যান্য কাগজ পত্রে সহি দিলেই পাবে তিনশ করে টাকা।
নেতার কথামত ইতোমধ্যে ওই ইউনিয়নের শতাধিক সহজ সরল কৃষক নেতার কথা মত এসে কাগজে স্বাক্ষর করেন। পরে বিষয়টি জানা জানি হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কৃষকেরা। বিষয়টি তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের কাছে বিচার দাবি করেন তারা।
বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতিমন গম বিক্রি হচ্ছে ৯শ-১ হাজার টাকা মন দরে। আর এসব গম খাদ্যগুডামে প্রেরণ করার উদ্যেশে কৃষককে ভুল বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে তিনশ টাকা। আর ব্যবসায়ী কৌশলে কৃষকের একাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে ফাঁদ পেতেছে।
৪নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি প্রর্মথ রায় জানান, ডিও মোস্তফার মাধ্যমে এলাকার কৃষকদের জন্য তিনশ করে দেয়া হয়েছে কৃষি কার্ডের জন্য। তাদের কাছে তো গম নেই। তিনশ টাকা পাচ্ছে এটাই তাদের অনেক উপকারে আসবে।
আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন জানান, আমার ইউনিয়নের কৃষকরা অভিযোগ করেছেন তাদের কৃষিকার্ড বাবদ ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে তিনশ করে টাকা ধরিয়ে দিয়েছে। তারা পরে বুঝতে পারে এটা ছিল লটারিতে মনোনীত কৃষকের গম বরাদ্দের জন্য তাকে টাকা দেয়া হয়। আর এ সুযোগে শত শত মেঃ টন গম সরকারী গুডামে দিয়ে বাণিজ্য ফল করার উদ্যেশ্য। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো যাদের ভুল বুঝিয়ে চেক ও বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে তাদের বরাদ্দ বাতিল করবেন।
ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল (ডিও মোস্তফার) সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ শাহা জানান, কৃষকরাই নিজেরাই এসে কাগজ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন। কৃষকেরা কার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তা আমার জানা নেই। তাদেরকে কেও ভুল বুঝিয়ে থাকলে আমাদেও করণীয় কিছু নেই। যারা বরাদ্দ পেয়েছেন তাদের নিজ নিজ একাউন্টে টাকা দিয়ে দেয়া হবে যথা সময়ে। অন্যদিকে একই ঘটনা ঘটেছে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাতেও।


এধরনের আরও সংবাদ

Editor: Ataur Rahman
News editor : Joherul Islam
email: newsnat24@gmail.com
Phone: 01717253362, 01744367842
N.C Road, Thakurgaon.