নিউজ ডেস্কঃ মিয়ানমারের বাগো শহরে সামরিক সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৬০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ৯১ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বাগো শহরে শুক্রবার (৯ মার্চ) রাত থেকে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এই অভিযানে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মেশিনগান, গ্রেনেড এবং মর্টার শেল ব্যবহার করে তারা।
রেডিও ফ্রি এসিয়ার বরাতে আল জাজিরা আরও জানায়, বাগো শহরে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। রাজপথে বিক্ষোভকারীদের ব্যারিকেডও সরিয়ে দিয়েছে তারা। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানায়, শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত স্থানীয়রা মাত্র তিনটি মরদেহ উদ্ধার করতে পেরেছেন। বাকিগুলো সেনা সদস্যরা স্থানীয় একটি প্যাগোডা এবং স্কুলে নিয়ে ফেলে রেখেছে।
এদিকে দেশটির সামরিক সরকারের দমন-পীড়নের ঘটনায় মিয়ানমারের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি দেশটিতে ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূত কিয়াও মোয়ে তুন। এ ছাড়া সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধেরও আহ্বান জানান তিনি।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তখন থেকে প্রায় প্রতিদিন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন। জান্তাবিরোধী আন্দোলনে দেশটিতে এখন পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ছয় শতাধিক সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে।
থাইল্যান্ডভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) হিসাব অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত ৬১৮ জন মানুষ জান্তা সরকারের গুলিতে নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯৩১ জন মানুষকে বন্দি করে রেখেছে সামরিক জান্তা সরকার।