নিউজ ডেস্ক: দেশের ৩৮ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) খান মো. নুরুল আমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ স্থগিতের নির্দেশনা জারি করা হয়।
আদালতে মামলাজনিত জটিলতায় এসব জেলার নিয়োগ কার্যক্রম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্বখাতভুক্ত সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮ এর ফলাফলে ৬০ শতাংশ নারী কোটা সংরক্ষণ হয়নি উল্লেখ করে হাইকোর্টে ৩৮ জেলায় রিট পিটিশন করা হয়েছে। এ রিট পিটিশনের আদেশে আদালত আগামী ছয় মাসের জন্য নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। ফলে আগের ঘোষণা মতে, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি এসব জেলায় যোগদানের বিষয়টি অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বলা হয়েছে, মামলাজনিত জটিলতায় এসব জেলায় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের যোগদান, কর্মশালা ও পদায়ন নির্দেশনা অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হলো। আদালতে বিষয়টি সুরাহা হলে পরে তাদের যোগদান-পদায়নের সময় জানিয়ে দেয়া হবে। এ নির্দেশনা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বাস্তবায়ন করতে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের ২০-২৫ জানুয়ারির মধ্যে ডাকযোগে নিয়োগপত্র পাঠানো হয়। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি যোগদান ও ১৭ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের কর্মশালামূলক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। ১৫ কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি দল গঠন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার এমন নির্দেশনা জারি করায় সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পদায়ন করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) গত বছরের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ ৫ জন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রথম ধাপে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মে, তৃতীয় ধাপে ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপে ২৮ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, ৫৫ হাজার ২৯৫ জন প্রার্থী পাস করেছেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এসব প্রার্থীদের গত বছরের ৬ অক্টোবর থেকে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাসব্যাপী সারা দেশের সব জেলায় মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করা হয়।
মৌখিক পরীক্ষা শেষ হলে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য ১৮ হাজার ১৪৭ জন শিক্ষক চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু নতুন শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটার বাস্তবায়ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় ইতোমধ্যে ৩৮ জেলায় শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত করেন আদালত।