নিউজ ডেস্ক: প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ১৯৮৫ সালে অর্গানোগ্রামে মোট পদ ছিল ছয় হাজার ৯৫৭টি। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৪৬২টিতে। দীর্ঘদিন ধরে মাত্র দুই হাজার ৫০৫টি পদ বেড়েছে। তাও আবার প্রকল্পের মাধ্যমে। এ অবস্থায় অধিদফতরের কাজের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে অর্গানোগ্রাম সংস্কার ও জনবল বৃদ্ধিতে অনুরোধ জানায় মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের প্রেক্ষিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর মিলে একে একে ২৫টি বৈঠক করে ১৮ হাজার ৬৮৮ পদ বাড়ানো সুপারিশ করে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র তিন হাজার ৫০টি পদের অনুমোদন দিয়েছে। সংসদীয় কমিটির বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সপ্তম বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ পশুসম্পদ ক্যাডারবহির্ভূত কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির মহাসচি মো. আফসার আলী।
তিনি বলেন, অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে ২৫টি বৈঠক করে ১৮ হাজার ৬৮৮ পদ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। সুপারিশটি কার্যকর করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে পরীক্ষাপূর্বক ছয় হাজার ৯৮৪ পদ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়ে সেখান থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো আলোচনা ছাড়াই তিন হাজার ৫০ পদ বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের (অর্থ বিভাগ) অতিরিক্ত সচিব রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, দেশের সব মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদের চাহিদার ভিত্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় বিচার বিশ্লেষণ ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে পদসংখ্যা অনুমোদন করে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করে অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছর সর্বোচ্চ পদ বৃদ্ধি করেছে। নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী তিন হাজার ১৯৩ পদ আগামী তিন বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জনবল সংকটের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মেলানো উচিত নয়। এ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে গ্রামের মানুষ সরাসরি জড়িত। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে এ মন্ত্রণালয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বাস্তবায়নের ৯টি সূচকই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ওপর নির্ভর করে। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ছিল মৎস্য, প্রাণী ও কো-অপারেটিভ সেক্টরে। গ্রামাঞ্চলে গরু, মুরগি ও মৎস্য খামারসহ সব ধরনের মৎস্য ও পশুপ্রাণির খামারে যদি চিকিৎসা সেবার জন্য জনবল না পাওয়া যায় তাহলে গ্রামের মানুষ এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। কেবিনেটে আলোচ্য সূচিভুক্ত করে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা উচিত। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবের উপস্থিতিতে জনবল সংকটের বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।
ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সভাপতিত্বে সংসদীয় কমিটির সদস্য মো. আশরাফ আলী খান খসরু, বেগম নাজমা আকতার, মোছা. শামীমা আক্তার খানম উক্ত বৈঠকে অংশ নেন।