নিউজ ডেস্কঃ রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সময় সংবাদের বিশেষ প্রতিনিধি ও রংপুর ব্যুরো প্রধান রতন সরকারকে আইনগত সহায়তার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র-আসক। গত ২২ এপ্রিল সিটি করপোরেশন এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন রতন সরকার। এই হামলার জন্য মেয়রকে দায়ি করে বক্তব্য দেন ও ফেসবুকে স্টাটাস দেন। এরই প্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল মেয়র মোস্তফা প্রায় একশ মোটরসাইকেলে সিটি করপোরেশন ও তার দলীয় লোকজন নিয়ে রংপুর কোতয়ালী থানায় গিয়ে রতন সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে রতন সরকারকে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেন। ২৪ ঘন্টা পর সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কাউন্সিলরসহ থানায় গিয়ে চাপ সৃষ্টি করেন। এ সময় রতন সরকারকে হত্যা করে তার রক্ত কুকুর দিয়ে খাওয়ানোর হুমকীসংবলিত শ্লোগান দেয়া হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে সিটি করপোরেশনের শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মেয়রের লেলিয়ে দেয়া বাহিনি বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা এমন কী বিভিন্ন জেলা উপজেলায় গিয়ে রতন সরকারকে খুঁজে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রতন সরকার ও স্থানীয় সাংবাদিকরা। এরপর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের ব্যানারে একটি সংবাদ সম্মেলন করে রতন সরকারের কোন ক্ষয়ক্ষতি হলে তার দায় পুলিশকে নিতে হবে বলে ঘোষণা করেন মেয়রের ঘনিষ্ঠ প্যানেল মেয়র-২ মাহমুদার রহমান টিটু। রতন সরকার ও স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, মেয়র ও সিটি করপোরেশনের অসংখ্য অনিয়ম-দূর্নীতির ধারাবাহিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এব্যাপারে নিয়ম অনুযায়ী প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ, প্রেসকাউন্সিলে অভিযোগ বা আদালতে মামলা দায়ের না করে ভিন্ন পথে রতন সরকারকে হেনস্থা করছেন মেয়র এবং প্রকাশ্যে তাকে রংপুর ছাড়া করার হুমকী দিচ্ছেন তিনি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একজন জেষ্ঠ কর্মকর্তা আবু আহমেদ ফয়জুল কবীর জানান, শুরু থেকে আমরা রংপুরের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছি। শনিবার কেন্দ্রের সভায় রতন সরকারকে যাবতীয় আইনি সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইন সহায়তাদানকারী সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন রতন সরকারকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে। সময় টেলিভিশনের এই সাংবাদিক প্রত্যন্ত জনপদ থেকে সকল অনিয়ম-দূর্নীতি, সমস্য-সম্ভাবনা, জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করে দেশপ্রেমের সাহসী সাংবাদিকতার একটি ধারা সৃষ্টি করেছেন। অতিসম্প্রতি স্থানীয়ভাবে স্বাধীনতাবিরোধী হিসাবে চিহ্নিত কয়েকজন সাংবাদিকের প্রত্যক্ষ ও মদদে নানা ঘৃণ্য ও অমানবিক আপপ্রচার চালানোরহচ্ছে। এই চক্রটি বিপিডিএ নামে প্রতাণামূলক একটি অনুমোদনহীন সংস্থাকে দিয়ে দুটি মামলা করিয়েছে রতন সরকারের বিরুদ্ধে। একই সময় অপসাংবাদিকতার অভিযোগ তুলে প্রেসক্লাব এলাকায় তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে সাংবাদিকদের এই সংগঠনটি। নিজেদের সদস্য রতন সরকারের বিরুদ্ধে এমন ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে শক্ত অবস্থান রিপোর্টার্স ক্লাব, বিএমএসএফ, রিপোর্টার্স ইউনিটি, তাজহাট প্রেসক্লাব, সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাংলাদেশ প্রেসক্লাবসহ বেশ কিছু সাংবাদিক সংগঠন। ছাত্রলীগের প্রাক্তন সংগঠক রতন সরকার বঞ্চিত গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে গঠিত রংপুর প্রেসক্লাব রিফর্ম মুভমেন্ট নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত। আরেক দিকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রতন সরকারের ওপর মেয়র ও তার লোকজনের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমূখর হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধ স্বপক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দলের নেতাকর্মীরা। গত কয়েক দিন ধরে ফেসবুকসহ স্যোসাল মিডিয়ায় মেয়রের বিরুদ্ধে ঝড় উঠেছে। খবর বিজ্ঞপ্তি’র।