নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রাজনীতিবিদদের জন্য ক্ষমতার চেয়ার আর কারাগার একেবারে পাশাপাশি থাকে। কাজেই এটা খুবই স্বাভাবিক, কেননা আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের এটা করতেই হবে।’
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৭ এ যেটা হয়েছে, ক্ষমতার বাইরে থেকেও আমাকেই প্রথম কারাগারে যেতে হয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কারাগারগুলোর উন্নয়ন করে যাচ্ছি। কেরানীগঞ্জে নারী কয়েদিদের জন্য নতুন কারাগার বানানো হয়েছে। এসব স্থাপনার উন্নয়ন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পুরো কারা ব্যবস্থায় আমরা বেশকিছু পরিবর্তনও করেছি। আগে কারারক্ষীদের কোনো পোশাক ছিল না, ট্রেনিং ছিল না, এমনকি তাদের আবাসনেরও ঠিক মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না।’
সরকার কারাগারে বন্দিদশায় থাকা কয়েদিদের নিরাপদ জীবনে ফিরে আসা নিশ্চিত করতে চায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারাগারে যারা গ্রেপ্তার হয়ে যায়; তারা অবশ্যই অপরাধী। কিন্তু তাদের পরিবারগুলো কষ্ট পায়। আর তাছাড়া এতগুলো লোক বেকার বসে থাকবে কেন! সেই জন্য সেখানে আমরা এখন ব্যবস্থা নিয়েছি কয়েদিদের ট্রেনিংয়ের এবং তাদের কিছু পণ্য উৎপাদন করা। আর সেই সঙ্গে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা করা। তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ফলে যে টাকাটা আসবে, সেখান থেকে পঞ্চাশ শতাংশ টাকা কয়েদি জমা করতে পারবে অথবা পরিবারের কাছেও পাঠাতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যেটা চাই সেটা হলো, কারাগারে শুধু অপরাধীদের বন্দি করে রাখা নয়। পাশাপাশি তাদের মনমানসিকতা পরিবর্তন করা, তাদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা দেওয়া যাতে ভবিষ্যতে আবার বের হয়ে একই অপরাধে যাতে জড়িয়ে না পড়ে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় জেলা কারাগারগুলোকেও উন্নত করে দেওয়া হচ্ছে। কেরানীগঞ্জ কারাগারের মতো করে দেশের জেলা কারাগারগুলোতেও পর্যায়ক্রমে ভার্চুয়াল কোর্টের ব্যবস্থা করা হবে।’
কারাগারের আধুনিকায়নে সরকার উদ্যোগী জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘কারাগারে রান্নার জন্য কাঠ পোড়ানো হয়। পরিবেশ রক্ষায় যেহেতু ব্যবস্থা নিয়েছি। তাই এখানেও কিছু আধুনিকায়ন করা হয়েছে। সেজন্য কারাগারের পাশেই এলপিজি স্টেশন নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানকার গ্যাসের স্টোরেজ দিয়ে কারাগারের চৌকিতে রান্নার ব্যবস্থা করা হবে। এতে করে বছরে অন্তত ৬০ লাখ টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে।’
সব উপজেলাসহ দেশের দুর্গম এলাকাতেও ফায়ার সার্ভিস গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগুনে পুড়ে আমাদের অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনো প্রত্যন্ত উপজেলাগুলোতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নেই। সরকার চেষ্টা করছে সব জায়গায় একটা করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করে দিতে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ২০ টি ফায়ার স্টেশন উপজেলা পর্যায়ে চালু করা হচ্ছে।’
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী কেরানীগঞ্জে ৩০০ কয়েদি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার, সেখানকার রান্নার জন্য এলপিজি স্টেশন, ২০টি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন এবং জেলা পর্যায়ে ৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।