নিউজ ডেস্কঃ দিল্লি বিধান সভা নির্বাচনের যে ফলাফল সামনে আসছে তাতে বলায় যায় আবার ক্ষমতায় আসছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বুথ ফেরত জরিপ তারই আভাস দিয়েছিল। এই নির্বাচনের আগে দিল্লিবাসীর কাছে প্রধানত প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিল বিজেপি এবং আম আদমি পার্টি। কী চান আপনারা, ধর্ম না উন্নয়ন? এ প্রশ্নে দ্বিতীয় বিকল্পকেই বেছে নিল দিল্লির নাগরিক। তারই প্রেক্ষাপটে তৃতীয়বারের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে চলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
আসন কিছুটা কমলেও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসছে আম আদমি পার্টি (আপ)। বিজেপির আসন বাড়লেও এবারও ধর্মীয় মেরুকরণ, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি), জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্ট্রার (এনপিআর)-এর ধাক্কায় এ বারও দিল্লির মসনদ অধরাই থেকে গেল বিজেপির কাছে। অন্যদিকে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল কংগ্রেস।
কিন্তু কী এমন ম্যাজিক দেখিয়েছেন কেজরিওয়াল? প্রথম বার ৪৫ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে কেজরিওয়াল কার্যত বোকামিই করেছিলেন বলে অনেকেই কটাক্ষ করেছিলেন সে সময়। কিন্তু সেটা যে লম্বা দৌড়ের প্রস্তুতি ছিল, তা বোঝা গেছে গত পাঁচ বছরে কেজরিওয়ালের উন্নয়নের রাজনীতিতে। দিল্লিবাসীর জন্য বিদ্যুতের বিল প্রায় মকুব করে দেয়া, মহিলাদের জন্য বিনামূল্য বাসযাত্রা, বিনা পয়সায় ২০ লিটার পর্যন্ত জল দেয়ার মতো জনমুখী প্রকল্পের ওপর আস্থা রেখেছেন দিল্লিবাসী। তার সঙ্গে ছিল প্রায় দুর্নীতিহীন সরকার উপহার দেয়া।
মঙ্গলবার( ১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ইভিএম খোলা শুরু হতেই দিকে দিকে আপের জয়জয়কার। গণনার যা প্রবণতা তাতে ৫৫টির কাছাকাছি আসন পেয়ে দিল্লিতে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে আম আদমি পার্টি। বিজেপি পেতে পারে কম-বেশি ১৫টি আসন। ভরাডুবির মধ্যে বিজেপির কাছে একমাত্র সান্ত্বনা, গত বারের চেয়ে আসন বাড়ানো।
অথচ কেজরিওয়ালের যাত্রা এতটা সহজ ছিল না। তিনি স্বীকার করেছেন, সরাসরি রাজনীতিতে আসার কথা কেরিয়ারের শুরুতে কখনওই ভাবেননি। কিন্তু ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের নিশ্চিন্ত সরকারি চাকরি ছাড়ার পর থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে ভাবে ঘটনা প্রবাহ এগিয়েছে, তাতে ধীরে ধীরে রাজনীতির গণ্ডিতে কার্যত নিজের অজান্তেই পা দিয়ে ফেলেছিলেন খড়গপুর আইআইটির প্রাক্তন শিক্ষার্থী কেজরিওয়াল।