মাদক ইয়াবা সাম্রাজ্যের অন্যতম গডফাদার সাইফুল করিম প্রায় নয় মাস সময় বিদেশে পালিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি দেশে ফেরার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ তালিকায় থাকা আসামী সাইফুল ইসলাম নিহত হন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টেকনাফ স্থলবন্দরের সীমানা প্রাচীরের শেষ প্রান্তে এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার মৃত্যু হয় যে জায়গাটিতে সেটি নাফ নদীর পারে। একসময় এই নদী থেকেই শুরু হয়েছিল সাইফুল ইসলামের অপরাধ জীবন।
১৯৯৫ সালে টেকনাফ স্থলবন্দর চালু হওয়ার পর সাইফুল করিম ঐ বন্দরে আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায়িক সাফল্যের হাত ধরে তিনি একাধিকবার সেরা করদাতা বা সিআইপি’র পুরষ্কারও পান।
১৯৯৭ সালে নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রথম ইয়াবার চালান ঢোকে। সেই চালানটি সাইফুল করিম আনেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছেন। এরপর থেকে তার তৈরি ইয়াবা নেটওয়ার্কটি নাটকীয়ভাবে বাড়তে থাকে। তিনি বনে যান ইয়াবা সাম্রাজ্যের দুই অধিপতিদের একজন। অন্য ইয়াবা গডফাদার হলেন টেকনাফের বিতর্কিত সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদী,
টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বিবিসিকে জানান, সাইফুল করিম বৃহস্পতিবার বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর পুলিশ তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে মিয়ানমার থেকে আনা ইয়াবার একটি বড় চালান নাফ নদীর পারে মজুত রয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সাইফুল করিমকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে, পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, অস্ত্রধারী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এতে সাইফুল করিম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ।এসময় পুলিশের ক’জন সদস্যও আহত হন বলে জানান ।
গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি টেকনাফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের উপস্থিতিতে যে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন, সাইফুল করিম তাতে যোগ দেননি। গত বছর মে মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তৈরি ৭৩ জন শীর্ষ ইয়াবা চোরাকারবারি ও ব্যবসায়ীর তালিকায় সাইফুল করিমের নাম ছিল দ্বিতীয়। তালিকার শীর্ষে রয়েছে আবদুর রহমান বদির নাম।