নিউজ ডেস্ক: চূড়ান্ত উত্তেজনার মধ্যেই বিভক্ত হয়ে গেল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর (জম্মু-কাশ্মীর)। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে অঞ্চলটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। কাশ্মীর বিভক্ত হয়ে গড়ে ওঠা দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের একটি হলো জম্মু-কাশ্মীর এবং অন্যটি লাদাখ। জম্মু-কাশ্মীরের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই এটি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে ভারত সরকার।
জম্মু-কাশ্মীর বিভক্ত হওয়ায় প্রকৃতপক্ষে কী ধরনের পরিবর্তন আসছে কাশ্মীরে? বিষয়টি সম্পর্কে অনেকের মধ্যেই পরিষ্কার ধারণা নেই। বিভক্ত কাশ্মীরের পরিবর্তন সম্পর্কে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। সেখানে ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।
কাশ্মীর বিভক্ত হওয়ায় এটি এখন দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। ফলে ভারতের একটি রাজ্য কমে যাচ্ছে। কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে উঠে যাওয়ায় ভারতের ২৯ রাজ্যের পরিবর্তে রাজ্য এখন ২৮টি। এরই মধ্যে কাশ্মীর থেকে রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ অঞ্চল কাশ্মীরের ওপর আরও বেশি কর্তৃত্ব চায় ভারত সরকার। এজন্যই মূলত স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে কাশ্মীরকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপ দেওয়া হলো।
কাশ্মীর বিভক্ত হয়ে যে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেগুলো এখন দুজন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অধীনে থাকবে। এর মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর হিসেবে ইতোমধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন গিরিশ চন্দ্র মুর্মু এবং লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর হিসেবে শপথ নিয়েছেন আরকে মাথুর। তারা অঞ্চল দুটির যাবতীয় বিষয় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবেন।
জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হওয়ার পরও তাদের নিজস্ব নির্বাচিত আইনসভা থাকবে। পাঁচ বছরের জন্য এই আইনসভা গঠিত হবে। তবে এদের কাছে তেমন কোনও ক্ষমতা থাকবে না। মূলত নয়াদিল্লি থেকেই অঞ্চলটিকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়া আগের মতো কাশ্মীরের আর কোনো আলাদা পতাকা বা সংবিধানও থাকছে না।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ সময় রাজ্যটিকে দুই ভাগে ভাগ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর থেকেই অঞ্চলটিতে প্রায় ১০ লাখ সেনা মোতায়েন করে ভারত। বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা। এর মধ্যে সেখানে মোবাইল ফোন সেবা চালু হলেও ইন্টারনেট সেবা এখনো স্বাভাবিক হয়নি।