বছরের শুরুতে বিনামূল্যে বই, শিক্ষাপঞ্জী আর উপবৃত্তি দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়িয়েছে। তবে, মানহীন প্রাথমিক শিক্ষা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে। যে কারণে উচ্চশিক্ষাও সঠিক পথে হাঁটছে না বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা। এ অবস্থায় শিক্ষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত নজরদারি জরুরি বলে মনে করেন তারা। তবে, প্রাথমিক শিক্ষা সচিব বলছেন শিক্ষার মান বাড়াতে মেধাবীদের নিয়োগ দেয়াসহ এরই মধ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বছরের আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বাংলা অক্ষরের সাথে পরিচিতি মেলেনি রাজধানীর বসিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণী ছাত্রী লামিয়ার। যে বয়সে স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ কিংবা সংখ্যা লিখতে পারার কথা সে বয়সে ঠিকমত বলতেই পারছে না লামিয়া। একই অবস্থা এই বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার্থীদের।
এক শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করা হয় সে ইংরেজি বর্ণমালা পারে কিনা। উত্তরে জানায়, সে জানে না।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এক শিক্ষিকা বলেন, এটা আমার বিষয় নয়, কেন পারে না সেটা আমি বলতে পারব না।
অপর এক শিক্ষিকা বলেন, যারা ঠিকভাবে স্কুলে আসে না তারা পারে না।
রাজধানীর ঢাকার বেশিরভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর এমনই বেহাল অবস্থা। সরকারি পর্যায়ে বহু অনুদান, প্রণোদনা আর বছর বছর পাসের হার আর জিপিএ পাঁচ বাড়লেও বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা ব্যবস্থার মানে কোনো পরিবর্তন নেই। এমনকি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সবশেষ প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে এমনই চিত্র।
শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শ্রেণীকক্ষে যতদিন পাঠদান উন্নত না হবে ততদিন শিক্ষার উন্নয়ন আশা করতে পারি না।
সমস্যা সমাধানে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বেশ কয়েকটি পাইলট কার্যক্রম চলছে বলে জানালেন সচিব।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম হোসেন বলেন, কার্যক্রমগুলো শেষ করতে পারলে আগামী এক বছরের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা তার সুদৃঢ় অবস্থানে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।
এমন প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নত করার পরিকল্পনা বাস্তবতার নিরিখে কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।