নিউজ ডেস্কঃ ধর্মঘটের দিন ঠাকুরগাঁওয়ের এমপি রমেশ চন্দ্রের গাড়িতে পেট্রল না দেয়ায় জেলা শহরের চৌধুরী ফিলিং স্টেশন পাম্পটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত বিভাগীয় ঘোষনার পর আজ আবার তেল সরবরাহ শুরু করে জেলার চৌধুরী ফিলিং স্টেশনসহ সকল তেল পাম্প কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা চৌধুরী ফিলিং স্টেশন পাম্পের আশপাশে গাড়ি রেখে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের বিতরণকর্মী রবিউল ইসলাম জানান, এমপি স্যারের গাড়ি যখন এখানে পেট্রল নিতে আসে, সে সময় অনেক মোটরসাইকেল আরোহী পেট্রল নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তাঁদের পেট্রল দিতে অস্বীকার করায় মোটরসাইকেল আরোহীরা এমপির গাড়ি দেখিয়ে বলতে থাকেন, দেখব তাঁকে (সাংসদকে) পেট্রল দিচ্ছেন কি না। এ কথা শুনে জনরোষের ভয়ে এমপি স্যারের গাড়িতে পেট্রল দিতে রাজি হইনি।’ এ ঘটনার জেরে পাম্প বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় পাম্প অসহাত্ব প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঠাকুরগাঁওয়ের সভাপতি এনামুল হক।
পরিবহনশ্রমিক এন্তাজুল হক জানান, এমপিকে অসম্মান করার জন্য এই পাম্প থেকে কোনো শ্রমিক ডিজেল-পেট্রল কিনবে না। স্থানীয় ট্রাক, ট্যাংক, লরি, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জয়েনুদ্দীন জানান, এলাকার এমপি নিজে একটি পাম্পে পেট্রল নিতে গিয়েছেন। আর কর্মচারীরা তাঁকে পেট্রল না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এটা করে ওই পেট্রলপাম্প কর্তৃপক্ষ তাঁকে অসম্মান করেছে। এ ঘটনায় এমপির অনুসারী শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তাই তাঁরা পাম্পটির যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।
বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঠাকুরগাঁওয়ের সভাপতি এনামুল হক বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। কর্মবিরতি সমিতির সিদ্ধান্ত। এ কর্মসূচি চলাকালে এমপি সাহেবের গাড়ি পেট্রল নিতে গেলে সে সময় অনেক ক্রেতার ভিড় ছিল। তাই বিতরণকর্মীরা এমপি সাহেবের গাড়িতে পেট্রল দিতে রাজি হননি। পরে আমিই অন্য একটি পাম্প থেকে তাঁদের পেট্রল নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিই। এখন শুনছি, ওই ঘটনা নিয়ে একদল শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে পাম্পের কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি আর কী বলল?’
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সফর শেষে গতকাল রোববার বিকেলে ঢাকা যাওয়ার জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পথে রওনা দেন রমেশ চন্দ্র সেন এমপি। পথে তাঁকে বহনকারী দুটি গাড়ি শহরের চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে পেট্রল নেওয়ার জন্য যায়। কিন্তু ফিলিং স্টেশনের কর্মীরা ধর্মঘটের কথা বলে গাড়ি দুটিতে পেট্রল দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় একটি গাড়িতে সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন বসে ছিলেন। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে আরেকটি ফিলিং স্টেশন থেকে পেট্রল নিয়ে সৈয়দপুরের দিকে রওনা দেন তিনি।