গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০৬ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৪৪ জন। এছাড়া বাংলাদেশে গেল ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাস প্রাণ কেড়ে নিয়েছে আরও ৯ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৪ জন।
করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে শনিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২১১৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০৬ জনের করোনা পজিটিভ আসে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৪৪ জনে। এখন পর্যন্ত দেশে সর্বমোট ২১ হাজার ৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
ফ্লোরা বলেন, আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় যে ৯ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৬ জন ঢাকার, দুজন নারায়ণগঞ্জের এবং একজন সাভারের। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৮ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৬ জন। হাসপাতালে যারা আছেন তাএদর মধ্যে ১১ জন আইসিসিইউতে বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।
নিউজ ডেস্কঃ দেশে গেল ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এই ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশ সরকারও সাধারণের চলাচল সীমিত করতে নানা পদক্ষেপ নেয়। এর অংশ হিসেবে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান। কয়েক দফায় বাড়িয়ে সেই ছুটি এখনও চলছে।
বর্তমানে দেশে ভাইরাসটির কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে বলে আগেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মানার পাশাপাশি সব পরামর্শগুলো মেনে চলতে বলা হচ্ছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সেই নিয়ম ভাঙছেন সাধারণ মানুষ। আর এক কারণে সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত রাস্তায় বেরনো নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
অনেকেই ভাঙছেন সেই নির্দেশও। তবে সাধারণকে এই নির্দেশনা মানাতে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা। কিছুক্ষেত্রে জরিমানাও করা হয়েছে।
গেল ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর খুব দ্রুতই সেখানে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তা ছড়ায় বিশ্বের অন্যান্য দেশে।
চীন এই ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও টালামালট অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের। সেখানে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৯ হাজার ৭৩৫ জনের শরীরে। এবং মারা গেছেন ৩৭ হাজার ১৫৪ জন মানুষ।
সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যায় এর পরের সারিতে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। বিশেষ করে স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে ভাইরাসটি ব্যাপক তাণ্ডব চালাচ্ছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডোমিটার ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্যানুসারে, বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ লাখ ৫০ হাজার ৬৮৯ জন। মারা গেছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৫৬ জন। অবস্থা আশঙ্কাজনক ৫৬ হাজার ৯৬৩ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৭২ হাজার ১০৩ জন।