স্টাফ রিপোর্টার ঠাকুরগাঁওঃ ঠাকুরগাঁওয়ে রাস্তার পাশে সরকারি গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য সংশ্লিস্টদের বিরুদ্ধে। এসময় স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তা উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। গাছ কর্তনের সাথে চিহ্নিত ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বঠিনা এলাকার ঠাকুরের ঘাট ব্রীজ সংলগ্ন রাস্তার পাশে কয়েকটি সরকারি গাছ কর্তন করা হয়।
এলাকাবাসি জানায়, ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নয়ন, সাবেক মেম্বার মোখলেছুর রহমান ও ঠান্ডী রায়সহ কয়েকজনের নির্দেশে শ্রমিকরা কয়েকটি সরকারি ইউক্যালিপক্টর গাছ কর্তন করে।
অনুমতি ছাড়াই গাছ কর্তনের সময় ওই রাস্তা দিয়ে চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন ইউনিয়ন পরিষদের দিকে গেলেও গাছ কর্তনকারিদের বাধা দেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পরবর্তিতে স্থানীয়রা একজোট হয়ে বাঁধা দিলে গাছ রেখে পালিয়ে যায় তারা। পরে বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গাছ উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসে।
প্রকাশ্যে অনুমতি ছাড়া ইউপি সদস্যসহ সংশ্লিস্টরা সরকারি গাছ কর্তন করায় এলাকায় তোলপাড় সৃস্টি হয়।
এ ঘটনা থেকে প্রকৃত দোষিদের আড়াল করতে গাছ কর্তনের পর স্থানীয় দক্ষিণ বঠিনা বায়তুল নুর জামে মসজিদ কমিটির লোকদের ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে সেই গাছ প্রদানের কথা বলে স্বাক্ষর নেয়া হয় বলে জানান মসজিদ কমিটি।
শুধু তাই নয় পরবর্তিতে মসজিদ কমিটি ও ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত কুমারের স্বাক্ষরিত একটি আবেদন পত্রে দেখা যায় ছয়টি গাছ কর্তন করার অনুমতি জন্য সুপারিশ নেয়া হয় ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সসদ্যের।
আর সেই আবেদনটি গেল ২৩ জুলাই চেয়ারম্যান নিজেই পৌছে দেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসে। যার সত্যতা স্বীকার করেছেন উপজেলা সংশ্লিস্টরা। গাছ কর্তনের দুদিন পর অনুমতি চেয়ে আবেদনটি পৌছানোর ঘটনা রহস্যময় বলে জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে দক্ষিণ বঠিনা বায়তুল নুর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও ক্যাশিয়ার নাজিমুল ইসলাম জানান, গাছ কাটার পর তাদের ডাকা হয় ইউনিয়ন পরিষদে। পরে গাছগুলো মসজিদের কাজে ব্যবহারে দান করা হবে মর্মে দরখাস্তে স্বাক্ষর নেন বলে স্বীকার করেন তারা।
গাছ কর্তনকৃত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সন্তোষ রায় বালু জানান, তাকে না জানিয়ে গাছগুলো কর্তন করা হয়। পরে স্থানীয়রা খবর দিলে সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করেন। এর বাইরে কিছুই জানেন বলে জানান তিনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সংশ্লিস্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমারের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুনাংশু দত্ত টিটো জানান, আইন সবার জন্য সমান। গাছগুলো কে কেটেছে অনুমতি ছাড়া তা অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবে প্রশাসন।
আর গাছ কর্তনের অনুমতি চাওয়া সেই আবেদন পত্রটি পেয়েছেন কি না জানতে আজ সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি কোন আবেদন পত্র পাননি। তবে আগেই গাছ কর্তন হয়েছে এ বিষয়টিও অজানা। খুতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।