নিউজ ডেস্কঃ ঠাকুরগাঁও জেলায় এনরিচ কোভিড-১৯ সাড়াদান কর্মসুচী –‘এনকোর’ শুরুর মাধ্যমে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫২ জনকে সরাসরি সহায়তা করতে যাচ্ছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (জিএসি) এর সহায়তায় ওয়ার্ল্ড ভিশন এনরিচ কোভিড-১৯ রেসপন্স (এনকোর) এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের কোভিড-১৯ প্রস্তুতি ও সাড়াদান কর্মসুচীর সাথে সামঞ্জস্য রেখে সংক্রমন প্রতিরোধী কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হবে। এনকোর প্রকল্প এমন ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে যা সারাদেশে বাড়তে থাকা কোভিড-১৯ সংক্রমন প্রতিরোধে সময়পযোগী কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়ছে, বিশেষ করে ২০২০ সালের ১৬ জুন একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ৪০০৮ জন সনাক্ত করা হয়েছে। মহামারী শুরুর আগে থেকেই ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশে ঠাকুরগাঁও জেলায় গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার অর্থায়নে এনরিচ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে যার মাধ্যমে মা ও শিশুর জীবন রক্ষাকারী সেবা প্রদানের মধ্য দিয়ে শিশু ও মাতৃমৃত্যু কমিয়ে আনছে। এনকোর-এর মতো মাহামারী শুরুর পর থেকেই ওয়ার্ল্ড ভিশন নিয়মিত কর্মসুচী ও প্রকল্পে যথাসম্ভব কোভিড-১৯ সংক্রমন প্রতিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করছে যাতে করে কমিউনিটি পর্যায়ে সংক্রমন কমানো যায় ।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৩টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৬৩০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে ৬৮,০৮৪ সেট ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) বিতরন করা হবে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ আক্রান্ত পরিবার ও রোগীকে অতিপ্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী যেমন অক্সিজেন সিলিন্ডার, নেবুলাইজার ও ১১,৭৩৯ সেট হাইজিন সামগ্রী দেয়া হবে ঠাকুরগাঁও জেলায়। ২৭৬ জন সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষনও প্রদান করা হবে যাতে তারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত, পৃথককরন, পরীক্ষা, পর্যবেক্ষন এবং চিকিৎসা সেবা দিতে পারে। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গুলোতে ১৯৭ টি হাত ধোয়ার স্পট ব্যবস্থা করা হবে যেন মানুষ ঘনঘন হাত ধুতে পারে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫৯০ জন ধর্মীয় ও সামাজিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ কমিউনিটির পুরুষ দল, নারী দল, বালিকা দলের ২,৪৫০ জন সদস্যকে প্রশিক্ষন দেয়া হবে যার মাধ্যমে তারা নিজেদের কমিউনিটিতে কোভিড-১৯ প্রতিরোধী বার্তা দিতে পারে। এছাড়া পুনঃব্যবহারযোগ্য মাস্ক তৈরীতে সাহায্য করা হবে এবং ২১,৬৫০ জনকে এই মাস্ক বিতরন করা হবে।
দেশের ২৪ জেলার ২৭০০ জন বয়স্ক মানুষ ও ১৬০০ শিশুর অংশগ্রহনে পরিচালিত ওয়ার্ল্ড ভিশনের সাম্প্রতিক একটি র্যাপিড অ্যাসেসমেন্টে দেখা গেছে শতকরা ৯০ ভাগ পরিবারের আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে এবং ৯৪.৭ ভাগ পরিবারে যথেষ্ট খাদ্যের সংকট আছে। এই কর্মসুচীর মাধ্যমে এমন সংকাটপন্ন ৪,৭৯৮ টি পরিবারকে শর্তহীন নগদ অর্থ সাহয়তা দেয়া হবে যাতে করে তারা এই সংকটকালিন সময়ে স্বাস্থ্য সেবা ও জীবিকার প্রয়োজন মেটাতে সমর্থ হয়। ২০,৩২৯ জন কৃষককে জিংক সমৃদ্ধ উন্নত জাতের (বায়ো –ফোর্টিফাইড) ধানের বীজ দেয়া হবে। পাশাপাশি ৫ বছরের কম বয়সী শিশু আছে এমন ১০৮৬৫ জন পিতামাতা/অভিভাবককে বাস্তভিটায় ফলনের জন্য দ্রুত বর্ধনশীল শাক-সবজির বীজ দেয়া হবে।
গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (জিএসি) সাথে চলমান অংশীদারিত্ব ও সহায়তার জন্য ওয়ার্ল্ড ভিশন কৃতজ্ঞ, এবং এই ধরনের সহযোগিতা কমিউনিটির বিভিন্ন অংশীদারি , যেমন নারী-পুরুষ, শিশুরা যারা কোভিড-১৯ সংক্রমনের কারনে বিভিন্ন সংকটের মধ্যে রয়েছে তাদের দ্বারাও প্রশংসিত হয়েছে। এনকোর প্রকল্পের মাধ্যমে কোভিড-১৯ প্রতিরোধী ও সচেতনতামুলক কার্যক্রম পরিচালনা করে ৪,৪৫,৪৫২ জন উপকারভোগীর কাছে সরাসরি পৌছানে সম্ভব হবে যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু এবং এর ফলে ১৪,০৫,০১৩ জন মানুষ পরোক্ষভাবে উপকৃত হবেন বলে ধারনা করা যাচ্ছে।