সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ক্ষমতার দ্বন্দ্বে কয়েক ভাগে বিভক্ত। এই অবস্থায় ক্ষমতাসীনদের দৃষ্টিভঙ্গির উপরই দলটির অবস্থান নির্ভর করছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অতীত এবং বর্তমান কর্মকাণ্ডের কারণে জাতীয় পার্টির ভাঙ্গা- গড়ায় দেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেও মত তাদের।
রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টির চেয়ে ব্যক্তি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই দেশের রাজনীতিতে বেশি প্রাসঙ্গিক ছিলেন। আর এরশাদের ভোটের রাজনীতির পুরোটাই ছিল একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল রংপুর কেন্দ্রিক। কিন্তু এরশাদের মৃত্যুর পর তার শূন্য আসনের মনোনয়ন নিয়ে রংপুরের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আর কেন্দ্র দুই ভাগে বিভক্ত।
তার উপর সংসদে বিরোধী দল এবং দলীয় চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এখন মুখোমুখি অবস্থানে।
এ অবস্থায় এরশাদের জাতীয় পার্টিকে আদর্শিক দিক বিবেচনায় রাজনৈতিক দল হিসেবেই মানতে নারাজ বিশ্লেষকরা। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দলটি ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠায়, তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাই রাজনীতিতে টিকে থাকবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় পার্টি আসলে সরকারি বিরোধী দল হিসেবে রাজনীতিতে আছে। তাদের আলাদা রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ড নেই। তাদের বর্তমান কর্মকাণ্ডে মানুষ বিনোদন পাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, জাতীয় পার্টি গৃহপালিত একটি রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ তাদের ইচ্ছানুযায়ী টিকিয়ে রাখবে তাদের।
পরপর দুই দফায় সংসদে বিরোধী দল হিসেবে অকার্যকর থাকায় জাতীয় পার্টির
ভাঙ্গা-গড়ায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোন প্রভাব পড়বে না বলেও মনে করেন
তারা।
সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিরোধী পার্টির ভূমিকা তারা পালন করতে পারেনি।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় পার্টি থাকলে বা ভাঙলে দেশের বর্তমান রাজনীতির ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।
জাতীয় পার্টিকে টিকে থাকতে হলে পারিবারিক রাজনীতির খোলস থেকে বেরিয়ে আসার কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।