নিউজ ডেস্কঃ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের সময় ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েনকে চেয়ারে বসতে না দেয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বৈঠকের সময় সোফায় বসতে দেয়ায় তুরস্কের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিয়ো দ্রাঘি। এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ানকে ডিক্টেটর বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। যদিও আঙ্কারার দাবি, করোনা মহামারির কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রটোকল মেনেই ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্টকে সোফায় বসতে দেয়া হয়েছে।
তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই এবং শরণার্থী সংকট সমাধানে আলোচনার জন্য গত মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) আঙ্কারা সফরে যান ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা। এ সময় তাদের রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনার মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়।
বিপত্তি বাধে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের সময়। তিন নেতার বৈঠক হলেও হলরুমে চেয়ার রাখা ছিল দুটি। বৈঠকে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের পাশের চেয়ারে বসেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। এ সময় নিজের বসার চেয়ার না পেয়ে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েনকে কিছুটা বিবৃত হতে দেখা যায়। শেষমেশ দূরে রাখা সোফাতে বসে পড়েন তিনি।
এ ঘটনায় বেজায় চটেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। বিষয়টিকে তুরস্কের অশোভন আচরণ বলে মন্তব্য করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। এমন ঘটনার জন্য তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ানকে একনায়ক শাসক বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
মারিও দ্রাঘি বলেন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান যা করেছেন তার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই একমত হতে পারছি না। আমি মনে করি, একজন নেতার সঙ্গে এটি কোনোভাবেই সঠিক আচরণ নয়। ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যা করা হয়েছে তাতে আমি সত্যিই লজ্জিত।
তবে ইইউ নেতাদের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ আঙ্কারা। এক সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসৌগলু বলেছেন, আন্তর্জাতিক প্রটোকল মেনেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাউকে কোনোভাবে ছোট করা হয়নি।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসৌগলু বলেন, তুরস্কের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া মানতে বাধ্য নই। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা আলাপ আলোচনা করেই ইইউ কর্মকর্তাকে চাহিদা অনুসারে সোফায় বসানো হয়েছে। তুরস্ক এ ধরনের বৈঠক প্রথমবার করেনি। এর আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করেছে তুরস্ক। আমরা সবসময় আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী সবাইকে সৌহার্দের সঙ্গে আতিথেয়তা করে থাকি।
এর আগে ব্রাসেলকে এক সংবাদ সম্মেলেন ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রধানের মুখপাত্র বিষয়টিকে দৃষ্টিগোচর বলে উল্লেখ করেন। বলেছিলেন, তিনি যদি স্বেচ্ছায় সোফায় বসতে চাইতেন তাহলে চেহারায় এমন ভঙ্গিমা থাকতো না। এমন বিবৃতকর ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ানকে দায়ী করেন ওই মুখপাত্র।