চাল চুরির অভিযোগ করায় ভোলায় সাংবাদিক সাগর চৌধুরীর ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরতা চালিয়েছে বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বড় মানিকা ইউপি চেয়ারম্যান জসিম হায়দারের ছেলে নাবিল। ক্ষোভ মেটাতে ওই সাংবাদিককে মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী অপবাদ দিয়ে পেটানো হয়। পরে নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর ওই সাংবাদিকের বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকালে উপজেলা সদরের রাজমনি সিনেমা হলের সামনে নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে সাগর চৌধুরী বলেন, ’আজ সকাল ৬টায় নাবিল আমাকে ফোন করে বলে আপনার সঙ্গে জরুরি কথা আছে, একটু আসেন। তখন আমি বলি, এত সকালে আমি কীভাবে আসবো। এরপরও আমি সেখানে গেলে, সিনেমা হলের দোতলায় আমাকে ডেকে নেয় সে। আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয়। তখন আমি দোতলা থেকে নিচের দিকে নেমে আসতে চাই। তখন সে পেছন থেকে আমার কলার চেপে ধরে এবং আঘাত করে। আমার চোখে আঘাত করে চোখ নষ্ট করে দেওয়ার জন্য। মাথার অনেক জায়গায় আঘাত করে। মাথাটা ফুলে গেছে। আমাকে মেরে ফেলার জন্য দুই হাত দিয়ে গলা চেপে ধরে। এছাড়া শরীরের অনেক জায়গায় আঘাত করে সে।’
সাংবাদিক সাগর চৌধুরী স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল ডব্লিউ ৩৬০ ডিগ্রির সম্পাদক ও প্রকাশক।
এ ঘটনায় ভোলার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, অনলাইন এডিটরস কাউন্সিল ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটির পক্ষে আবুল কালাম আজাদ ও মাহমুদ হোসেন মোয়াজ্জেম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সেইসঙ্গে হামলাকারী নাবিলকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, মাছ ধরার ওেপর সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় কর্মহীন হয়ে ঘরে থাকা জেলেদের নামে বরাদ্দকৃত চাল রাতের আঁধারে চুরি করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বড় মানিকা ইউপি চেয়ারম্যান জসিম হায়দারের ছেলে নাবিলের বিরুদ্ধে। বিশ্বস্ত সূত্রে ঘটনাটি নিশ্চিত হয়ে এর তথ্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাংবাদিক সাগর চৌধুরী অবহিত করেন। এ খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয় বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জসিম হায়দারের ছেলে নাবিল। পরে ভোলার বোরহানউদ্দিনে সাংবাদিক সাগর চৌধুরীকে ধরে এনে মোবাইল চোর ও ছিনতাইয়ের অপবাদ নাবিল দিয়ে মারধর করে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তার ছেলেকে পাওয়া যায়নি।
বোরাহানউদ্দিন থানার ওসি এনামুল হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিক সাগর চৌধুরী থানায় এসেছিলেন কিন্তু অভিযোগ দায়ের করেননি। বলেছেন চিকিৎসার জন্য বোরাহানউদ্দিন হাসপাতালে যাচ্ছেন। সেখান থেকে আর থানায় আসেননি।’
তবে ঘটনাটি জেনেও পুলিশের পক্ষ থেকেও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
সুত্র-বাংলাা ট্রিবিউন