নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী ভারতে করোনাভাইরাসের দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় এক লাখ ২৬ হাজার ৭৮৯ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। ভারতে করোনা মহামারি শুরুর পর একদিনে এত রোগী আগে কখনো শনাক্ত হয়নি। পাশাপাশি একই সময়ে সেখানে আরও ৬৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতজুড়ে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। গত সোমবার (৫ এপ্রিল) প্রথমবারের মতো করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। পরদিন মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সেটি একটু কমলেও বুধবার (৭ এপ্রিল) তা বেড়ে এক লাখ ১৫ হাজারে পৌঁছায়। পরে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়ে এক লাখ ২৬ হাজার ৭৮৯ জনে দাঁড়িয়েছে। একদিনে আক্রান্তের হিসেবে এই সংখ্যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে এখন সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৯ লাখ ১০ হাজার ৩১৯ জন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় এবং দেশটির দ্বিতীয় জনবহুল রাজ্য মহারাষ্ট্রে করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ হাজার ৯০৭ জন। পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৩২২ জনের। ভারতের মোট সক্রিয় রোগীর অর্ধেকেরও বেশি শুধু মহারাষ্ট্রেই। রাজ্যটির বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি বেশি খারাপ পরিস্থিতি রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ের।
করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য ছত্তিশগড়। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৩১০ জন। করোনার প্রথম ঢেউয়ে রাজ্যটির পরিস্থিতি এত খারাপ ছিল না।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরপ্রদেশে ৬ হাজার, মধ্যপ্রদেশে ৪ হাজার, তামিলনাড়ুতে ৪ হাজার, গুজরাট ও কেরালায় সাড়ে ৩ হাজার আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে।
দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতেও পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৫০৬ জন। চলতি বছরে যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
পাশাপাশি গত কয়েকদিনে উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব রাজ্যে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে, আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও।
অন্যদিকে, ওড়িশা, গোয়া, জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশের করোনা পরিস্থিতি অন্য রাজ্যগুলোর মতো খারাপ না হলেও অবস্থা দ্রুত অবনতির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারত আক্রান্তে তৃতীয় এবং মৃত্যুতে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ২৯ লাখ ২৬ হাজার ৬১ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৬৬ হাজার ৮৯২ জনের।