নিউজ ডেস্কঃ করোনায় নতুন ৭ জনের মৃত্যু বাংলাদেশে আর নতুন ৪১৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৭ জনে। করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
গেল ডিসেম্বরে চীনে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তা লাগামছাড়া হতে শুরু করে জানুয়ারিতে। মাসের মাঝামাঝিতে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। তখন থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সব দেশকেই প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানাতে। টুকটাক প্রস্তুতিও নেয় দেশগুলো।
এর মাঝে গেল ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়। তখন বাড়ানো হয় সতর্কতা। এরপর শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা মার্চ জুড়ে প্রতিদিন প্রায় এক রকমই ছিল। তবুও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সেই ছুটি চলছে এখনও। বুধবার(২২ এপ্রিল) সবশেষ জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে ছুটি বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ মে পর্যন্ত।
ছুটির উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। কিন্তু শুরুতে সরকারের সেই আহ্বান অনেকটা শুনতে দেখা যায়নি মানুষকে। পরবর্তীতে কঠোর হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আদেশ জারি করে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত মানুষের বাইরে বেরুনে নিষিদ্ধ করা হয়
ছুটি ২৬ মার্চ থেকে শুরু হলেও এপ্রিলের শুরু থেকেই হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করে শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা। পরীক্ষা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে করোনা রোগী বাড়ায় উদ্বেগ তৈরি হয় সাধারণের মনে। লকডাউন করা শুরু হয় বিভিন্ন জেলা।
ঢাকা সিটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হলেও করোনার হটস্পট হিসেবে ধরা হয় নারায়ণগঞ্জকে। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কয়েকজন রোগী। এছাড়া সেখান থেকে অন্যান্য জেলায় যাওয়ার পরও কয়েকজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এই ভাইরাসকে রুখতে সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া অন্য কোনো উপায় এখনও নেই। বিশ্বের অনেক দেশই চেষ্টা চালাচ্ছে এর ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের। শতাধিক গবেষণার কয়েকটি মানবদেহে প্রয়োগের কাজও শুরু হয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এমন শঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে যে, এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন হয়তো কোনোদিনই পাওয়া যাবে না।
এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য নেই কোনো স্বীকৃত ওষুধও। জাপানের অ্যাভিগান ও হাইড্রোক্লোরোকুইন এতে মারাত্মক ফল দেয় বলে বিভিন্ন দেশ তথ্য দিলেও পাওয়া গেছে ভিন্ন মতও। তাই আক্রান্ত রোগীদের অনেকেই বাসায়ই অবস্থান করছেন। অবশ্য বাসায় থেকেই সুস্থও হচ্ছেন অনেকে।
সুস্থতার হার বেশি হলেও এখনও ভাইরাসটিতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় দু্ই লাখ মানুষ। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী এতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ।