• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১২ অপরাহ্ন

‘শেখ হাসিনা মাইকে বলছিলেন, আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা নির্দেশ দিচ্ছি, গুলি চালাবেন না’

সাংবাদিকের নাম / ৪৭ জন দেখেছেন
আপডেট : সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২০

নিউজ ডেস্কঃ ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আইনজীবীদের সাহসিক ও শক্ত অবস্থানের কারণেই প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বহনকারী ট্রাকে গুলি চালানোর পাশাপাশি তাকে টার্গেট করে গুলি তাক করেছিলো পুলিশ। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল সময় সংবাদকে এ তথ্য জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে গিয়ে দেখলাম নেত্রী আক্রান্ত গাড়ীটা ঘেরাও করা আছে; রাইফেলগুলো নেত্রীর দিকে তাক করে রাখা হয়েছে। আর মানুষ দিক্বিদিক পালাচ্ছে।

সে সময়ে শেখ হাসিনা মাইকে বলছেন, আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আপনাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি আপনারা গুলি চালাবেন না। তখন গুলি শুরু হয়ে যায়। এইভাবে সেদিন হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

এদিকে ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে পুলিশের গুলিতে ২৪ জন হত্যা এবং তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম গণহত্যা হিসেবে পরিচিত এ ঘটনার ৩২ বছর পূর্ণ হওয়ার চারদিন আগেই এ রায় দেওয়া হল।

এর আগে দুপুরে চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন আজ রায় দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।


এর আগে গতকাল ৪ আসামির সাফাই সাক্ষ্য শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

কারাগারে থাকা চার আসামির প্রত্যেকেই পুলিশের সাবেক সদস্য। তারা হলেন- পুলিশের তৎকালীন হাবিলদার প্রদীপ বড়ুয়া, কনস্টেবল মমতাজ উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. আব্দুল্লাহ।

এ মামলার অপর ৪ আসামির মধ্যে প্রধান আসামি চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, কনস্টেবল বশির উদ্দিন ও আব্দুস সালাম মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্সপেক্টর গোপাল চন্দ্র (জেসি) মণ্ডল ঘটনার পর থেকে নিরুদ্দেশ। তিনি ছিলেন কোতোয়ালি অঞ্চলের পেট্রোল ইন্সপেক্টর।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর লালদীঘি ময়দানে সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ২৪ জন মারা যান। আহত হন দু’শতাধিক মানুষ।

এলোপাতাড়ি গুলিতে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন কুমার বিশ্বাস, স্বপন চৌধুরী, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দ মিয়া, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ, শাহাদাত, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া ও মো. কাসেম।

৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলাটি পুনরায় প্রাণ ফিরে পায়। আদালতের আদেশে মামলাটির তদন্তের ভার পড়ে সিআইডির ওপর। সিআইডি ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে। আবারও আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর পুলিশের আট সদস্যকে আসামি করে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।


এধরনের আরও সংবাদ